নবম পে-স্কেল ও রেশনিং পদ্ধতি চালুসহ সরকারি কর্মচারীদের সাত দাবি
রেশনিং পদ্ধতি চালুসহ বৈষম্যমুক্ত নবম পে-স্কেল ঘোষণা, অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য ১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীদের ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদান, টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল, সচিবালয়ের ন্যায় পদ-পদবি এবং এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি বাস্তবায়নসহ সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে সরকারি কর্মচারীরা।
শুক্রবার (১০ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত জোট-বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে সরকারি কর্মচারীরা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমাদের সরকার যে বেতন ভাতা দিচ্ছে সেটা দিয়ে আমাদের সংসার চালাতে কষ্ট হয়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে পরিবার চালাতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী, আপনি এ দেশের অনেক উন্নয়ন করেছেন। আপনার দ্বারা অনেক অসাধ্য কাজ সাধ্য হয়েছে। আপনি এ দেশে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলসহ অনেক বড় বড় কাজ করেছেন। আপনার কাছে আমাদের একটাই দাবি, সচিবালয়ের ন্যায় আমরা যারা বাইরে কর্মরত আছি আমাদের পদন্নোতির ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানাচ্ছি। বর্তমান সময়ের সঙ্গে সংগতি রেখে বাড়ি ভাড়া, রেশনিং পদ্ধতি চালু, চিকিৎসা ভাতা, শিক্ষা সহায়ক ভাতা ও টিফিন প্রদানের জন্যও অনুরোধ জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন
এসময় তারা সাতটি দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হলো–
১. পে-কমিশন গঠনপূর্বক বৈষম্যমুক্ত ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের আগে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদান করতে হবে।
২. রেশনিং পদ্ধতি চালু এবং ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে।
৩. সচিবালয়ের ন্যায় সব দপ্তর, অধিদপ্তর ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের পদ ও পদবি পরিবর্তনসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে।
৪. টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহালসহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পুনর্বহাল এবং সব স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে গ্রাচ্যুইটির পাশাপাশি পেনশন প্রবর্তনসহ বিদ্যমান গ্রাচ্যুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০ শতাংশের স্থলে ১০০ শতাংশ নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচ্যুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
৫. সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ। আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিলপূর্বক ওই পদ্ধতিতে নিয়োগ করা ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে।
৬. ব্লক পোস্টের কর্মচারীসহ সব পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে, অধস্তন আদালতের কর্মচারীদের বিচার বিভাগীয় কর্মচারী হিসেবে গণ্য করতে হবে। এ ছাড়া টেকনিক্যাল কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদের টেকনিক্যাল পদ মর্যাদা দিতে হবে।
৭. বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক সব ভাতা পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি ও মুখ্য সমন্বয়ক মো. ওয়ারেছ আলী, বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি ও সমন্বয়ক খায়ের আহম্মেদ মজুমদার, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সমন্বয়ক ও সেক্রেটারি মোহাম্মদ গাজীউল হক চৌধুরী, বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল হালিম প্রমুখ।
ওএফএ/এসএসএইচ