মাস্ক পরে গাড়ি চালালে দম বন্ধ হয়ে আসে

রোদ-গরমে খুব কষ্ট হয় রিকশা চালাতে। এর মধ্যে আবার মাস্ক পরে গাড়ি চালাতে হয়। যেটা খুবই কষ্টদায়ক। আমার তো মাস্ক পরে রিকশা চালালে দম বন্ধ হয়ে আসে। এভাবেই ঢাকা পোস্টকে কথাগুলো বলছিলেন রিকশাচালক আবদুল মোতালেব।
বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) মিরপুর-২ নম্বরে রিকশাচালক আবদুল মোতালেবের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তার গ্রামের বাড়ি বগুড়ায়। ঢাকায় রিকশা চালিয়েই তিনি পাঁচজনের সংসার চালান।
আবদুল মোতালেব বলেন, আমার পরিবার গ্রামের বাড়িতে থাকে। স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়েকে নিয়েই আমার সংসার। আমি রিকশা চালিয়ে টাকা পাঠালে সংসার চলে। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচও আমার উপার্জনে হয়। এছাড়া গ্রামে কিছু ঋণ আছে। সেগুলো গত এক বছরে পরিশোধ করেছি।
তিনি বলেন, এখন একটু ভালো আছি। কিন্তু সরকারের বিধিনিষেধে কয়েকদিন উপার্জন করতে পারিনি। বর্তমানে গাড়ি চালানোর সুযোগ দিলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী ভাড়া মারতে পারছি না। আগের তুলনায় এখন ভাড়া কম হচ্ছে। এর মধ্যে আবার প্রচণ্ড রোদ। এই রোদ-গরমে মাস্ক না পরলে পুলিশ ঝামেলা করে। কিন্তু মাস্ক পরে রিকশা চালাতে পারি না, খুব কষ্ট হয়।
তিনি আরও জানান, ‘লকডাউনের’ প্রথম কয়েকদিন পুলিশ ঝামেলা করেছিল। কিন্তু এখন ঝামেলা করে না। তবে মাস্ক না পরলে পুলিশ ঝামেলা করে। সরকারি বিধিনিষেধে কয়েকদিন আগেও কিছু দূর পর পর পুলিশের চেক পোস্ট ছিল। যার ফলে ঝামেলা বেশি হতো। কিন্তু এখন চেক পোস্ট অনেক কমে গেছে। এজন্য রিকশা চালাতে সেভাবে সমস্যা হয় না।

মাহবুব নামে দায়িত্বরত এক পুলিশ বলেন, শুরুতে আমরা খুব কঠোর ছিলাম। কিন্তু এখন তো বিধিনিষেধ রিকশা চালকদের জন্য শিথিল হয়েছে। এজন্য এখন আর তাদের সেভাবে ধরি না। যদি মাস্ক না পরে সেটা বুঝিয়ে বলি। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে চলাচল করতে বলছি আমরা।
এর আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত ১৮ দফা বাস্তবায়নে গত ৫ এপ্রিল থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে অঘোষিত ‘লকডাউন’ শুরু হয়। নির্দেশনা অনুসারে জরুরি পণ্যবাহী পরিবহন ছাড়া রাস্তাঘাটে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ারও নির্দেশনা ছিল। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিষেধাজ্ঞার দ্বিতীয় দিন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দেন, দেশের বিভিন্ন সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬ এপ্রিল থেকে সকাল সন্ধ্যা গণপরিবহন চলবে। তবে আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
পরে করোনার সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত এক সপ্তাহের কঠোর নিষেধাজ্ঞা ১১ এপ্রিল শেষ হলেও এই মেয়াদ বাড়িয়ে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা শেষে ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের বিধিনিষেধ জারি করা হয়। পরে এর সময়সীমা বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। সবশেষ চলমান বিধিনিষেধ তৃতীয় দফায় ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
এসআর/এসএসএইচ