প্রকাশ্যেই যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে ছুটছে অ্যাম্বুলেন্স ও ট্রাক

সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের মধ্যে প্রকাশ্যেই যাত্রী নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স ও ট্রাক। যদিও এই দুটি যানে স্বাভাবিক সময়েও যাত্রী পরিবহনে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
বুধবার (১২মে) রাজধানীর আমিনবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঘরমুখী হাজারো মানুষের ভিড়। গাড়ির অপেক্ষায় অধিকাংশ যাত্রী। যাত্রীবাহী বাস চলাচল না করায় যে যেভাবে পারছে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছে। অনেকে কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ও ট্রাকে করে বাড়ি যাচ্ছেন।

যাত্রীরা বলেন, ঈদের সময় যদি বাড়ি যেতে না পারি তাহলে কীভাবে হবে? তাই যেভাবেই হোক বাড়ি যাচ্ছি। তবে বাসে রাজশাহী যেতে লাগে ৪০০-৫০০ টাকা। কিন্তু এখন সুযোগ বুঝে অ্যাম্বুলেন্সে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। নিয়ম না থাকলেও যাত্রী পরিবহন করছে অ্যাম্বুলেন্স ও ট্রাক।
আরও পড়ুন : ফেরিতে যাত্রীদের চাপে ৫ জনের মৃত্যু
মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এমনকি ঈদের ছুটি চলাকালে কর্মস্থলে অবস্থান করতে নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। তারপরও থামানো যাচ্ছে না ঘরমুখী মানুষের ঢল।
গাইবান্ধাগামী যাত্রী মো. ইদ্রিস আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছি। এতো কষ্ট করে কোনো দিন বাড়িতে যাইনি। এবারই প্রথম এতো কষ্টের সঙ্গে ভাড়াও বেশি লাগছে। সরকার সাধারণ জনগণের কথা চিন্তা না করেই মনমতো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে।

তিনি বলেন, সরকার যাত্রীবাহী বাস চলাচল চালু করলেই পারত। এই যে অ্যাম্বুলেন্সে গাদাগাদি করে যাত্রী যাচ্ছে তাতে কি স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে? উল্টো ঝুঁকি বাড়ছে। একদিকে কষ্ট, অন্যদিকে বাড়তি ভাড়া ও ঝুঁকি নিয়েই বাড়ি যেতে হচ্ছে আমাদের। বাস চালু থাকলে এ কষ্ট হতো না।
আরও পড়ুন : ঈদের পর সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
ভাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বাস চলছে না। তাই যে যেভাবে পারছেন সেভাবেই গলাকাটা ভাড়া নিচ্ছে। আমিনবাজার এলাকায় এসে দেখি অ্যাম্বুলেন্সে করে মানুষ যাচ্ছে। আবার অনেকেই ট্রাকে করে যাচ্ছেন। তবে আমি ট্র্যাকের থেকে অ্যাম্বুলেন্সে যাওয়াটা নিরাপদ মনে করছি। ঢাকা থেকে গাইবান্ধা যেতে এসি বাসে ভাড়া নেওয়া হয় ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা। আর ননএসি বাসে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ভাড়া লাগে। কিন্তু আজ জনপ্রতি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে দুই হাজার টাকা। যা অনেক বেশি। আবার যাত্রীও বেশি নিচ্ছে বেশি। এক কথায় আমাদের জিম্মি করে বেশি ভাড়া নিচ্ছেন চালকরা।
আরও পড়ুন : বিধিনিষেধ আমলে নিচ্ছেন না ঘরমুখো মানুষ
অ্যাম্বুলেন্সচালক রতন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাস চলছে না। মানুষের চাপও অনেক বেশি। তাই অ্যাম্বুলেন্সে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছি। যাত্রী পরিবহনে আয় বেশি হচ্ছে। সরকারের নির্দেশনা এখন আর মানুষ মানে না। এখন কেউ করোনার ভয়ে বাসায় বসে নেই। নির্দেশনাও কেউ মানছে না। যেহেতু রোগী নিয়ে ঢাকায় আসতে হয় সেহেতু যাওয়ার পথে যাত্রী নিয়ে গেলে লাভটা বেশি হয়। এজন্যই যাত্রী পরিবহন করছি।

ট্রাকচালক শাহ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কাঁচামাল নিয়ে রাতে ঢাকায় এসেছি। এখন যাওয়ার পথে আমিনবাজার পর্যন্ত ফাঁকাই এসেছি। আমিনবাজার এসে দাঁড়াতেই দেখি ট্রাক-অ্যাম্বুলেন্সে করে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি দেখে, আমিও গাড়ি পার্কিং করেছি। আমিনবাজার থেকে ২৫ জন যাত্রী নিয়ে রওয়ানা হয়েছি। সবার কাছ থেকে জনপ্রতি ১ হাজার করে ভাড়া নিয়েছি।
এসআর/এসকেডি