সর্বত্রই ঈদের ছুটির আমেজ

ঈদের ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবস অর্থাৎ রোববার (১৬ মে) রাজধানী ঢাকায় সরকারি-বেসরকারি দফতরগুলোয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম ছিল। অনেক সরকারি-বেসরকারি অফিসে ঈদের পর কাজে ফিরেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
রোববার সকাল থেকে সচিবালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকে কাজে যোগ দেন নিয়ম মেনে। খাদ্য, ভূমি, মৎস্য, গৃহায়ন ও গণপূর্ত, সড়ক পরিবহন ও সেতুসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কোলাহল ছিল না, কর্মে মুখরতা ছিল না। তবে মন্ত্রণালয়গুলোর জরুরি সেবার শাখা খোলা ছিল।
এবার ঈদের ছুটিতে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থল ত্যাগ না করতে সরকার থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তাই ঈদের ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবসে ব্যাংক কর্মকর্তাদের উপস্থিতি বেশি ছিল। ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবসে রাজধানীর ব্যাংকপাড়া মতিঝিল, দিলকুশায় ঈদের আমেজ বিরাজ করতে দেখা গেছে। তবে ছিল না ব্যস্ততা।
বিধিনিষেধ চলমান থাকায় সকাল ১০টায় শুরু হয়ে লেনদেন চলেছে দুপুর ২টা পর্যন্ত। আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করতে ব্যাংক খোলা রাখা হয় বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। এদিন ব্যাংকগুলোয় লেনদেন হলেও গ্রাহকদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়নি। তবে সঞ্চয়পত্র কিনতে গ্রাহকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের মতিঝিল শাখার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আজহার উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে জানান, আজ গ্রাহকের তেমন চাপ নেই। কারণ, ব্যাংক খুললেও ব্যবসা-বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, মার্কেট-দোকানপাট খোলেনি। এছাড়া অনেক শিল্প-কারখানাও বন্ধ রয়েছে।
ছুটি শেষে খোলা হয়েছে শেয়ারবাজার। রোববার শেয়ারবাজারে সকাল ১০টায় শুরু হয়ে লেনদেন চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। অফিস করছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, রোববার সকাল থেকে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়ক, প্রগতি সরণি, মিরপুর-গাবতলীসহ প্রধান সড়কগুলোয় গাড়ির চাপ ছিল স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম। তবে ঢাকার প্রবেশদ্বার সংলগ্ন সড়কগুলোয় ভিড় দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গণপরিবহন চলাচল করেছে। তবে রাস্তা ফাঁকা থাকায় বেশিরভাগ চালক ছিলেন বেপরোয়া।
বাস চলাচল করলেও ছিল না যথেষ্ট যাত্রীর উপস্থিতি। বাসগুলো বিভিন্ন স্টপেজে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিল। বলাকা পরিবহন, বিহঙ্গ পরিবহন.শিকড় পরিবহনসহ বিভিন্ন পরিবহনের বাসেই যাত্রী ছিল কম। আগারগাঁওয়ে আলিফ পরিবহনের বাসের চালকের সহকারী বাবুল মিয়া দুপুরে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। বললেন, বাসে মাত্র ছয়জন যাত্রী আছেন।
অটোরিকশাচালকরাও যাত্রীর জন্য এখান থেকে ওখানে ছুটছিলেন। সকাল ১০টায় মহাখালী লেভেল ক্রসিংয়ে দাঁড়িয়ে অটোরিকশাচালক মনির হোসেন বললেন, গাড়িও কম, মানুষও কম। এখনো ঈদ শেষ হয় নাই মনে হয়। যাত্রী নাই। শুনতাছি, আবারও নাকি লকডাউন দিব। লকডাউন দিলে তো ভিড় বাড়ব না।
করোনার বিস্তার রোধে সরকারের বিধিনিষেধে বন্ধ রয়েছে বিনোদনকেন্দ্রগুলো। এসব বিনোদনকেন্দ্রে ঈদের কয়েকদিন যে ভিড় দেখা যায়, তা এবার অনেকটাই ছিল না। সে কারণে রাজধানঈর প্রধান প্রধান বিনোদনকেন্দ্র সংলগ্ন সড়কগুলো অনেকটা ফাঁকা ছিল।
রাজধানীর সড়কের পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের গুলশান বিভাগের বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার সুবীর রঞ্জন দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাস্তা এখনও ফাঁকা। যানবাহনের চলাচল খুবই কম। ঈদে যারা বাড়িতে গিয়েছেন তারা এখনও ঢাকায় ফেরেননি বলে রাস্তায় গাড়ির তেমন কোনো চাপ নেই। তবে ঘরমুখো মানুষ ঢাকায় ফিরলে রাস্তায় গাড়ির চাপ বাড়বে। আশা করা যায়, আগামী সপ্তাহের শুরু থেকে রাজধানী আবার তার চিরচেনা রূপে ফিরবে।
এমএসি/পিএসডি/আরএইচ