যুক্তরাষ্ট্র থেকে টিকা পাওয়া যাবে কি না জানা যাবে রাতে

যুক্তরাষ্ট্র থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা চেয়েছিল বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে দেশটি থেকে এখনও কোনো ইতিবাচক সাড়া আসেনি। টিকার বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে জবাব দেবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার (২০ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিয়ান সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কিছু বাড়তি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আছে জেনে আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম; তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমরা চিঠি দিয়ে বলেছি, খুব বিপদে পড়ে গেছি ; জরুরিভিত্তিতে আমাদের ২ মিলিয়ন টিকা দাও। পরবর্তীতে আনঅফিশিয়ালি শুনলাম আমরা অগ্রাধিকার তালিকায় নেই, কারণ আমাদের দেশে মৃত্যু সংখ্যা কম। যুক্তরাষ্ট্র অগ্রাধিকার দিচ্ছে, যেখানে মৃত্যু সংখ্যা বেশি ; যেমন, ভারত, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকারে বাংলাদেশের নাম না থাকলেও চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, টিকা পেতে তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। আমাকে জানানো হয়েছে আজ সন্ধ্যার পর টিকার বিষয়ে জবাব দেবে তারা।
আরও পড়ুন : সাংবাদিক রোজিনার সঙ্গে যা ঘটেছে খুবই দুঃখজনক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যুক্তরাজ্য থেকে টিকা পেতে সরকার চেষ্টা করলেও দেশটি কোনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি জানিয়ে মোমেন বলেন, শুধু যুক্তরাষ্ট্র না অন্য দেশেও চেষ্টা করছি, আমরা ব্রিটিশদেরও বলেছি, তোমরা আমাদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দাও। তারা আমাদের বসিয়ে রাখছে। পরবর্তীতে ব্রিটিশ লর্ড আহমেদ জানালেন, বেসরকারিভাবে চেষ্টা করতে।
এ সময় ভারত থেকে টিকা পেতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করকে ফোন করেছিলাম, বলেছিলাম আমাদের যে করেই হোক টিকার ব্যবস্থা করে দিতে। তাকে আমি আগে চিঠিও লিখেছি। ওনাকে বললাম যে, আপনাদের টিকা ব্যবহার করেছি ; আমাদের ১৫ লাখ লোক আটকে গেছে। আপনারা আমাদের উপহার হলেও টিকা দেন। উনি বললেন, আমি আপনাদের অবস্থা জানি, আমাদের অবস্থা আরও খারাপ; কোনোভাবে চেষ্টা করেন। আমি বলেছি, আপনাদের কারণে আমরা আটকে গেছি। কিন্তু উনি পাঠাতে পারবেন সেটা বলেননি। ভারত কখনও বলেনি টিকা দেবে না, তবে দিতে পারছে না।
রাশিয়া থেকে টিকা আনার বিষয়ে মোমেন জানান, দেশটি থেকে টিকা আনা নিয়েও আলোচনা চলছে। তবে এখনও চূড়ান্ত কিছু হয়নি। কাজ চলছে, হয়ে যাবে।
চীন থেকে টিকা আনার বিষয় চূড়ান্ত পর্যায়ে
চীন থেকে দেশে টিকা আনার বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চীন থেকে টিকা আনার বিষয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে আছি। চীন তিনটা ডকুমেন্ট পাঠিয়েছিল, এর মধ্যে আমরা দুটো ফিলআপ করে পাঠিয়েছি ; আমাদের একটা ডকুমেন্ট গতকাল বুধবার চীনে পাঠানো হয়েছে। ওই ডকুমেন্টে কিছু অংশ ইংরেজি আর বাকি অংশ চৈনিক ভাষায় ছিল। আমরা ফিলআপ করার সময় চৈনিক ভাষায় লেখা অংশে সই করিনি। চৈনিক ভাষা বোঝার জন্য এরই মধ্যে আমরা একজন প্রফেসর নিয়োগ দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা শুধু যোগাযোগ করিয়ে দেই। বাকি কাজটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেখে। তারা ঠিক করে কবে টিকা আনবে, কতগুলো আনবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তরিকতার অভাবে চীন থেকে টিকা আনতে দেরি হচ্ছে অভিযোগ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনের তিনটা ডকুমেন্ট এর দুটো পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কারণে কিছুটা দেরি হচ্ছে। এ জন্য আমাদের রাষ্ট্রদূত খুবই হতাশ, ডকুমেন্টগুলো না হলে প্রসেস চূড়ান্ত করা যাচ্ছে না। তিনি আমাকে ফোন করেছেন, মেসেজ দিয়েছেন; আমি সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছি তাগাদা দেওয়ার জন্য। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এ কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা যায়।
এনআই/এসকেডি