ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের উন্নয়নে ঋণ-অনুদানের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের উন্নয়নে উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি ঋণ ও অনুদানের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
রোববার (২৩ মে) এসএমই ফাউন্ডেশন এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স বাংলাদেশের (এএফডিবি) উদ্যোগে যৌথভাবে কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) এবং অনানুষ্ঠানিক খাতের চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রাকবাজেট ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের উন্নয়নে জেলা, উপজেলা, গ্রোথ সেন্টার ও ক্লাস্টারসমূহের উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এসএমই ফাউন্ডেশনসহ সরকারি বেসরকারি সংস্থার তত্ত্বাবধানে তাদের জন্য ঋণ ও অনুদানেরও ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ প্রবাহ এবং দক্ষতা উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশনকে অধিক আর্থিক সহায়তা ও প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ দিলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
ওয়েবিনারে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। সম্মানিত অতিথি ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশ-এর আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির ড. ফাহমিদা খান। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন সোনিয়া বশীর কবির এবং বিবি রাসেল। এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এএফডিবির সভাপতি মানতাশা আহমেদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পসহ অনানুষ্ঠানিক খাতের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জামানতের অভাবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারদের যেন ঋণ পেতে সমস্যা না হয়, এজন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম চালু করেছে সরকার।
তিনি বলেন, অনানুষ্ঠানিক খাতের দক্ষতা বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে কাজ করছে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। ট্রেড লাইসেন্স না থাকায় ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পেতে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের। এজন্য আসছে বাজেটে তাদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখা ও এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য জেলায় জেলায় এসএমই পল্লী স্থাপন করার পরামর্শ দেন প্রতিমন্ত্রী।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ক্ষতি নিয়ে একটি জরিপের বলছে, এসব উদ্যোক্তাদের বেশিরভাগই করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের সুফল পাননি। তাই প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ দ্রুত বিতরণে কার্যক্রম গ্রহণে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এছাড়া ঋণের পরিমাণ আরও বাড়ানোর দরকার। এসব ক্ষেত্রে এসএমই ফাউন্ডেশন, পিকেএসএফসহ সরকারি-বেসরকারি ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থাগুলোকে ঋণ বিতরণের কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন ।
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা এবং নারী-উদ্যোক্তাদের আসছে বাজেটে বিশেষ প্রণোদনা সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। কারণ বেশিরভাগ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা সরকারের ঘোষিত প্রণোদনার অর্থ পায়নি। এজন্য প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের টিকিয়ে রাখার উদ্যোগ নিতে হবে বলে জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, এসএমই উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে নীতি সহায়তা ও বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজন। না হলে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হারিয়ে যাবে। কারণ করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহায়তায় আরও সদয় ও উদার হতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এসআর/এইচকে/ওএফ