‘বিচারের পর দল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ আছে’

গণহত্যার বিচারের পর দল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ আছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিভিন্ন আইন আছে। আর যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিচারের কথা সংবিধানে আছে। আমরা করিনি বা করবো না সেটি কথা না। আমরা বিচারিক প্রক্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। সুষ্ঠুভাবে বিচার হওয়ার পর গণহত্যার সঙ্গে দলের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে যে ধরনের রায় পাবো, তার ওপর ভিত্তি করে বহু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সুযোগ আমরা পাবো।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলা হয়।
আসিফ নজরুল বলেন, সংস্কার নিয়ে আমাদের কর্ম পরিকল্পনার চারটা ধাপ ছিল। একটা হচ্ছে কমিশনগুলো তাদের রিপোর্ট প্রণয়ন করবে, তাদের সুপারিশ দেবে। দ্বিতীয় হচ্ছে, কমিশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য আলোচনা হবে। এই লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যমত কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই কমিশনের নেতৃত্বে আছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সংস্কার কমিশনের প্রধানরা এখানে সদস্য হিসেবে আছেন। ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা প্রয়োজনীয় আইন এবং নীতি প্রণয়ের কাজ শুরু করব। চতুর্থ ধাপে বাস্তবায়ন। আমাদের প্রত্যাশা আছে আমরা পুরো কাজটা সম্পন্ন করে যেতে পারবো। নির্ভর করছে, রাজনৈতিক দলগুলো কতটুকু সংস্কার করতে ঐকমত্য হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ১৬ ডিসেম্বরের ভাষণে বলেছেন যে, আমরা ন্যূনতম কিছু সংস্কার সম্পন্ন করে যদি নির্বাচন করতে চাই তাহলে এই বছর হবে। যদি আমরা আরও কিছু সংস্কার প্রত্যাশিত মাত্রা করতে চাই। তাহলে কয়েক মাস লাগতে পারে, সেটা হচ্ছে সামনের বছর জুনের মধ্যে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যখন আমরা আলাপ আলোচনা করব তখন দেখব যে ন্যূনতম সংস্কারক কোনগুলো আছে। এর বাইরে প্রত্যাশিত সংস্কার চিহ্নিত করার চেষ্টা করব।
আরও পড়ুন
বাড়তি সময় প্রসঙ্গে আসিফ নজরুল বলেন, বাড়তি সময় লাগছে, কারণ কমিশনের কিছু কিছু রিপোর্টে ওভারল্যাপিং আছে। আবার কিছু কিছু সমন্বয় করা প্রয়োজন। পাশাপাশি কমিশন নির্বাচনের টাইমলাইনের সঙ্গে সম্পর্কিত করে একটি রোডম্যাপ করে দেবেন।
সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলাপের বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিভিন্ন আইন আছে। আর যুদ্ধাপরাধীদের দায়ে বিচারের কথা সংবিধানে আছে। আমরা করিনি বা আমরা করবো না সেটি কথা না। আমরা বিচারিক প্রক্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। সুষ্ঠুভাবে বিচার হওয়ার পর আমরা গণহত্যার সঙ্গে দল সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে যেই ধরনের রায় পাবো তার ওপর ভিত্তি করে বহু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সুযোগ আমরা পাবো।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের কার্যক্রম, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থাকে চিরতরে বিলুপ্তের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে মনে করি। আজকের চারটি কমিশন তাদের রিপোর্ট দিয়েছেন। সংস্কারের ব্যাপারে মানুষের একটা আকাঙ্ক্ষা আছে, সেটাকে সংস্কার কমিশন এড্রেস করেছেন। সেগুলো প্রতিবেদনে এসেছে। আমরা বিশ্বাস করি, জুলাই অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের কাঠামোগত সংস্কারের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, সেটা বাস্তবায়ন হবে। রাজনৈতিক দল সিভিল সোসাইটি এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রত্যেকটি সেক্টরে সংস্কার আনতে পারব।
এমএসআই/এসএম