যাত্রী সংকটে গাবতলী টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়ছে কম

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধে দীর্ঘ দেড় মাস বন্ধ থাকার পর সোমবার (২৪ মে) থেকে চালু হয়েছে দূরপাল্লার বাস। কিন্তু প্রথমদিন থেকেই আশানুরূপ যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না এসব বাসে।
মঙ্গলবার (২৫ মে) রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল থেকে দূরপাল্লার পরিবহন চলাচল শুরু হলেও যাত্রী তেমন নেই। সরকারের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী বাসে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ছাড়ার কথা থাকলেও সেই যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ জানান, প্রায় দেড় মাস পর দূরপাল্লার রুটে বাস চলাচল শুরু হলেও যাত্রী কম থাকায় মালিক পক্ষকে লোকসান গুণতে হচ্ছে। ঈদের সময়টা আমরা ধরতে পারিনি, সেটা হলে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যেত। তবে নতুন করে এ খরা কাটতে মাসখানেক সময় লাগতে পারে।
তিনি বলেন, বাসে ওঠার সময় ও পরে যাত্রীরা যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন সেই বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া আছে। আমরা চাই, পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রী উভয়ই সরকারের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী বাসে যাতায়াত করুক। এছাড়া ৬০ শতাংশ ভাড়া দিয়ে বাসে উঠবে এবং অবশ্যই মুখে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গাবতলী বাস টার্মিনালে সাকুরা পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার কাজল বলেন, প্রায় দেড় মাস পরে গতকাল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যান চলাচল শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রথমদিন থেকেই যাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। আজ দিতীয় দিনেও একই অবস্থা, যাত্রী নেই।
তিনি বলেন, অন্যান্য দিনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আমাদের কোম্পানির প্রায় ৮ থেকে ১০টি বাস ছেড়ে যেতো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উদ্দেশে। কিন্তু এখন যাত্রী কম বিধায় সকাল থেকে ৪টি বাস ছেড়ে গেছে। তবে যাত্রী বাড়লে বাসের সংখ্যাও বেড়ে যাবে।
হানিফ পরিবহনের কাউন্টারের মিন্টু হোসেন বলেন, অর্ধেক যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পরও বাসের বেশিভাগ সিট খালি থাকছে। তবে ঢাকা থেকে অন্য জেলায় যাত্রী যাওয়ার তুলনায় বেশি আসছে ঢাকার বাইরে থেকে।
তিনি বলেন, আমাদের ৪০ সিটের গাড়িতে বর্তমানে আমরা ২০ সিট করে যাত্রী নিচ্ছি। তবুও অর্ধেক যাত্রীও পাচ্ছি না। কোনো সময় ১০ থেকে ১২ জন, কোনো সময় তার থেকেও কম। তবে গাড়ি যাচ্ছে নিয়মিত।
এদিকে বাসের প্রতিটি যাত্রীকে মাস্ক ব্যবহার ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে পরিবহনগুলোর পক্ষ থেকে। টার্মিনালগুলোতে চোখে পড়ে বাসচালক, সহকারী ও সেখানে কর্মরত কর্মীদের ব্যস্ততা। কেউ কেউ হাঁকডাক দিয়ে যাত্রী টানার চেষ্টা করছেন। নির্দিষ্ট সময় অন্তর-অন্তর বাস ছেড়ে যাচ্ছে বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে।
এদিকে যাত্রী কম থাকায় এবং দূরপাল্লার বাস চালু হওয়ায় লাভের তুলনায় লোকসান বেশি বলে জানিয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্ট অনেকেই। বিশেষ করে ঈদের আগে বাস চালু করলে একটা কিছু হতো বলে মনে করে এ খাত সংশ্লিষ্টরা।
দূরপাল্লার বাস চলাচলের প্রধান শর্ত হিসেবে সরকার বলেছে, কর্মী ও যাত্রীদের কঠোর স্বাস্থ্যবিধি বিশেষ করে মাস্ক পরতে হবে বাধ্যতামূলক হিসেবে।
এর আগে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল থেকে ‘লকডাউন’র ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় বাস-লঞ্চ, ট্রেনসহ সব ধরনের দূরপাল্লার যান চলাচল। এরপর ৬ মে থেকে অন্তঃজেলা বাস চলাচলের অনুমতি দিলেও বন্ধই ছিল দূরপাল্লার সব ধরনের পরিবহন।
এসআর/এসএম