দুর্নীতিতে যুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধরতে কমিশন গঠনের সুপারিশ

অতীতে বিভিন্ন সরকারের সময়ে যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ভোট জালিয়াতি, অর্থপাচার, দুর্নীতি এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণহত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের জন্য সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
কমিশনের প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অতীতে বিভিন্ন সরকারের সময়ে যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ভোট জালিয়াতি, অর্থপাচার, দুর্নীতি এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগষ্টের গণহত্যার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত হয়ে জনপ্রশাসনের পেশাদারিত্ব, ভাবমূর্তি ও একটি গণতান্ত্রিক দেশের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করেছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্তের জন্য মাঠ পর্যায়ে জনমত রয়েছে বিধায় একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে কমিশন মনে করে।
আরও পড়ুন
অন্যদিকে, সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট, ২০১৮-এর ৪৫ ধারা সংশোধন করে কোনো সরকারি কর্মচারীর ২৫ বছর চাকুরিকাল পূর্তিতে তাকে সরকার থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার বিধান বাতিল করার জন্য সুপারিশ করা করেছে কমিশন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তবে বিধান রাখা যায় যে, কোনো সরকারি কর্মচারী ১৫ বছর চাকুরি পূর্তিতে অবসর নিতে আবেদন করলে সরকার তা মঞ্জুর করতে পারবে।
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ ইস্যুতে প্রতিবেদনে বলা হয়, কোনো সরকারি কর্মকর্তা রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বলে নির্দেশনা জারি করা যেতে পারে। বিশেষ করে বিভিন্ন সার্ভিসের নামে যেসব সমিতি রয়েছে তারা কোনো রাজনৈতিক দল বা নেতার পরিচয় দিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বা দাবি আদায়ের জন্য কোনো বিক্ষোভ বা প্রতিবাদ সমাবেশ করতে পারবেন না। ব্যক্তি হিসেব কেউ সংক্ষুদ্ধ বা বৈষম্যের শিকার হলে তার প্রতিকারের জন্য তিনি বিধি মোতাবেক আবেদন করতে পারবেন।
পদোন্নতির ক্ষেত্রে পুলিশ বা কোনো গোয়েন্দা বিভাগের কাছে রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাওয়ার প্রথা বাতিল করার জন্য সুপারিশ করেছে কমিশন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জনপ্রশাসনে রাজনীতিকীকরণের স্তর থেকেই শুরু হয়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষিত হওয়ার পূর্বে কোনো প্রার্থীর পুলিশ ভেরিফিকেশন করা যাবে না। বিসিএস পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার পরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত নিয়োগের পূর্বে পুলিশের বিভাগের কাছে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা আছে কিনা সে সম্পর্কে প্রতিবেদন চাইবে। প্রয়োজনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রতিবেদন চাইতে পারে। পুলিশ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরিবর্তে প্রার্থীর যোগদানকৃত মন্ত্রণালয় কর্তৃক সম্পাদিত হবে। এছাড়া পাসপোর্ট, দ্বৈত নাগরিকত্ব, সমাজসেবা সংস্থা বা এনজিওর বোর্ড গঠন ইত্যাদি নাগরিক সেবার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম বাতিল করার জন্যও সুপারিশ করা হলো। একজন নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র থাকলে তার বিষয় নিষ্পত্তি করা যেতে পারে।
এসএইচআর/এআইএস