তৎক্ষণাৎ জানালেও আসেনি প্রশাসন, এসেছে মেরে অবস্থা খারাপ করার পর

গাজীপুরে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় আহত সাতজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাদের একজনের অভিযোগ, প্রশাসনকে তৎক্ষণাৎ জানানো হলেও আসেনি। মেরে অবস্থা খারাপ করার পর প্রশাসন ঘটনাস্থলে আসে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হামলায় আহত কাশেম (১৭), ইয়াকুব (২৪), শুভ শাহরিয়ার (১৬), হাসান (২২), গৌরভ ঘোষ (২২), আবদুর রহমান ইমন (২০), সাব্বির খান হিমেল (২২) ও কাজী ওমর হামজা (২১) বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে কাশেমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢামেকে চিকিৎসাধীন উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সাব্বির খান হিমেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, শুনলাম আমাদের নামে ওই বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে। ওরা তো আমাদের বদনাম করছে। সে হিসেবে আমরা গিয়ে ট্র্যাপে পড়েছি। চারপাশ দিয়ে মানুষ এসে আমাদেরকে ঘেরাও করে ফেলে। সবার হাতে রামদা, ছুরি। তাদের হাতে বড় বড় বাঁশও ছিল। তারা আমাদের আটকে ফেলে। তখন যে যার মতো জান নিয়ে পালায়। কিন্তু আমরা ২০-২৫ জন আটকে যাই।
তিনি বলেন, হামলা কারা করেছে তাদের আমরা চিনতে পারিনি। তবে আমরা ট্র্যাপের মধ্যে পড়ে গেছি। এটা তাদের ষড়যন্ত্র ছিল আমাদের ওপর হামলা করার। সেই ট্র্যাপে পা দিয়ে আজ আমাদের এ অবস্থা।
এসময় অভিযোগ করে হিমেল বলেন, প্রশাসনকে আমরা তৎক্ষণাৎ জানিয়েছি, কল করেছি। প্রশাসন আসেনি। প্রশাসন এসেছে প্রায় ২ ঘণ্টা পর আমাদেরকে মেরে অবস্থা খারাপ করার পর।
আরও পড়ুন
চিকিৎসাধীন আরেক শিক্ষার্থী আবদুর রহমান ইমনের বাবা শফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ছেলের মাথা, হাতে ও আঙুলে কোপ দিয়েছে হামলাকারীরা। আরও বিভিন্ন জায়গায় কোপ আছে। তাকে অনেক মারধর করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

এর আগে হাসপাতালে আহতদের দেখতে আসেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, গাজীপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় যারা জড়িত তাদের সর্বোচ্চ বিচারের আওতায় আনা হবে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে গাজীপুরে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ খ ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার শিকার হন শিক্ষার্থীরা। আহতরা দাবি করেছেন, মোজাম্মেল হকের বাড়িতে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ওই ঘটনার পর রাতে ফেসবুকে পোস্ট দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি লেখেন, ‘গাজীপুরে আজকেই হবে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের শেষদিন, আমরা আসছি…।’
এদিকে ওই ঘটনার প্রতিবাদে আজ গাজীপুরে সমাবেশ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।
এসএইচআর/এসএসএইচ