ভেন্টিলেশন সাপোর্টে আলী ইমাম, মৃত্যুর খবর গুজব

গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজধনীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি আছেন শিশু সাহিত্যিক আলী ইমাম। তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখা হয়েছে। এদিকে তিনি মৃত্যুবরণ করছেন এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দিবাগত রাতে ঢাকা পোস্টকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন তার ব্যক্তিগত সচিব তৌহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, স্যারকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে দিয়ে রাখা হয়েছে। কখনও তার ভেন্টিলেশন সাপোর্ট লাগছে। আবার কখনও লাগছে না। তার অবস্থা ভালো বা খারাপ কোনটাই বলা যাচ্ছে না। তিনি সাড়া দিচ্ছেন। এক কথায় পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে, তার মৃত্যুর খবরটি গুজব।
গত ২০ মে থেকে শারীরিক জটিলতা নিয়ে আলী ইমাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে উল্লেখ করে তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এর আগে গত বছর তিনি মৃদু স্ট্রোক করেছিলেন। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাসা ফিরে যান।
ছয় শতাধিক বইয়ের লেখক বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক, শিশু সংগঠক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আলী ইমাম ১৯৫০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। কর্মজীবনের শেষ প্রান্তে একাধিক স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনের আগে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন (২০০৪-২০০৬) ও অধুনালুপ্ত চ্যানেল ওয়ান (২০০৭-২০০৮)-এর মহাব্যবস্থাপক ছিলেন।
আরও পড়ুন : আলী ইমাম : শিশুসাহিত্যের সারথি
১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৭ বছর তিনি ইউনিসেফের ‘মা ও শিশুর উন্নয়নে যোগাযোগ কার্যক্রম প্রকল্প’ পরিচালক ছিলেন। ওই দায়িত্ব পালনকালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে, জার্মানির মিউনিখে, ব্রাজিলের রিওতে অনুষ্ঠিত ‘চিলড্রেন মিডিয়া সামিটে’ যোগদান করেন। জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত ‘প্রি জুঁনেসি চিলড্রেনস টিভি প্রোডাকশন প্রতিযোগিতা’র (২০০০) জুরির দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ছিলেন সার্ক অডিও ভিজুয়াল বিনিময় অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়কারী (২০০০-২০০১)। টেলিভিশন ও বেতারে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের নির্মাতা ও উপস্থাপক হিসেবে তার বিশিষ্টতা বিশেষ প্রশংসনীয়। বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘হ্যালো, আপনাকে বলছি’ (১৯৯৯-২০০৪) নামে তার উপস্থাপিত সরাসরি অনুষ্ঠানটি জনপ্রিয় হয়েছিল। এছাড়াও বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিখ্যাত প্রামাণ্য শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া (১৯৮০-১৯৮৭) এর আলোচিত প্রযোজক ছিলেন আলী ইমাম।
বাংলাদেশের শিশু সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য আলী ইমাম বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার (২০০১) ও শিশু একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কার (২০১২) ছাড়াও অনেক পুরস্কার লাভ করেছেন। শিশুসাহিত্যিক হিসেবে জাপান ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে ২০০৪ সালে তিনি সমগ্র জাপান পরিভ্রমণ করেন।
কিশোর বয়স থেকেই তার শিশুসাহিত্য চর্চার শুরু। ১৯৬৮ সালেই তিনি পূর্ব-পাকিস্তান শিক্ষা সপ্তাহে বিতর্ক ও উপস্থিত বক্তৃতায় চ্যাম্পিয়ন হন। ১৯৮৬ সালে ইউনেস্কো আয়োজিত শিশুসাহিত্য বিষয়ক প্রকাশনা কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ স্কাউটসের প্রকাশনা বিভাগের ন্যাশনাল কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন।
এএইচআর/ওএফ