চট্টগ্রামে আদালতের আদেশ না মানায় ডিসি অফিসের ম্যাজিস্ট্রেটকে শোকজ

অর্থঋণ মামলায় আদালতের আদেশ পরিপালন না করায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. আবু রায়হানকে শোকজ করা হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শিকল বাহা মৌজার দুটি দাগের জমির মালিক আবুল বশর। জমিগুলো তিনি ন্যাশনাল ব্যাংক পিএলসি খাতুনগঞ্জ শাখার কাছে বন্ধক রেখে ঋণগ্রহণ করেছিলেন। আবুল বশরের খেলাপি ঋণের ৬৩ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৩২ টাকা আদায়ের দাবিতে ব্যাংক এই মামলা করে। ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি এক দরখাস্তের মাধ্যমে অধিগ্রহণকৃত ওই দুই দাগের জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ রোয়েদারদের অর্থ বাদী ব্যাংকের বরাবর অবমুক্ত করার জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা ওই আদেশ পালন না করায় বাদি ব্যাংকের আবেদনক্রমে ২০২৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর এই টাকা বাদি ব্যাংকের বরাবর অবমুক্ত করার জন্য পুনরায় নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশের প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আবু রায়হান সেই টাকা অবমুক্ত না করে একটি ব্যাখ্যা দাখিল করেন। তার ব্যাখ্যায় দেখা যায়, ওই দাগের টাকা আবুল বশরের নামেই প্রস্তুত হয়েছে। কিন্তু আদালতের আদেশ না মানায় আবুল বশর উপস্থিতির মাধ্যমে এলএ শাখার ভাউচার এবং বাদী ব্যাংকের নামে নামজারি খতিয়ান প্রস্তুতির মাধ্যমে এলএ ভাউচার উত্তোলন এবং ব্যাংকের নামে নামজারি খতিয়ান প্রস্তুতির মাধ্যমে অ্যাওয়ার্ড সংশোধন দরকার বলে ব্যাখ্যা দাখিল করেন।
আদালতের আদেশে উল্লেখ করা হয়, আদালতের আদেশ পালন করা রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানের অবশ্যক ও দায়িত্ব। ফলে বিবাদী কিংবা অন্য কোন দাবিদার আপত্তি না থাকা সত্ত্বেও আদালতের আদেশ মোতাবেক বাদী ব্যাংকের বরাবরে ওই টাকা অবমুক্ত না করে তিনি যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তা আদালত অবমাননাকর। এই কারণেই আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি তাকে ব্যাখ্যা প্রদান করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম বলেন, দুই বার আদেশ প্রদান করা হলেও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা বন্ধকি সম্পত্তির ক্ষতিপূরণের টাকা বাদি ব্যাংকের বরাবরে অবমুক্ত করেনি। মূলত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার সহযোগিতা এবং আদালতের আদেশ অবমাননার কারণে ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ আদায় আটকে আছে। একারণে সংশ্লিষ্ট ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তাকে আদালতে শোকজ করা হয়েছে।
এমআর/এসএমডব্লিউ