বোরহানুদ্দীন কলেজ নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

ঢাকা পোস্টে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ‘অবৈধ’ অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে বোরহানুদ্দিন, সম্মানির নামে হরিলুট! শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটির বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি ‘অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’।
প্রতিবাদপত্রে বলা হয়েছে, শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজ পুরাতন ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। জুলাই-আগস্ট গণঅভূত্থানেও দুইজন ছাত্র শহীদ এবং অনেক ছাত্র আহত ও এখনও চিকিৎসাধীন হওয়াসহ আমাদের কলেজের ছাত্ররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে অত্র কলেজের শিক্ষার্থীদের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ আপনার পত্রিকায় “অবৈধ অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে বোরহানুদ্দীন কলেজ, সম্মানির নামে হরিলুট!” যে সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ বিষয়ে প্রতিবেদক মুছা মল্লিক, কলেজ অধ্যক্ষের কোন মতামত নেননি যা একপেশে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, মিথ্যা এবং মানহানিকর।
প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয়েছে, প্রতিবেদক মুছা মল্লিক তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, অবসরে গিয়েও অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন অবৈধ। কিন্তু উদ্ভূত পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনটি এড়িয়ে গেছেন প্রতিবেদক। বিদ্যমান পরিস্থিতির আলোকে গত ২৯ আগস্ট, ২০২৪ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানের ক্ষমতা (এডহক কমিটির) নবনিযুক্ত কমিটির উপর ন্যস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। উক্ত প্রজ্ঞাপনের আলোকেই বর্তমান অধ্যক্ষকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেন পরিচালনা পরিষদ। একইসাথে প্রতিবেদক কলেজের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আফফেছানীকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে কিছু অসত্য, মনগড়া ও কাল্পনিক অভিযোগ করেছেন যা স্বচ্ছ সাংবাদিকতার রীতিবিরুদ্ধ। কলেজের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আফফেছানী কলেজে দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ৫ মাস অতিবাহিত হয়েছে। তাছাড়াও গভর্নিং বডিতে একাধিক সদস্য বিদ্যমান রয়েছেন। এই পাঁচ মাসে কীভাবে শুধুমাত্র প্রতি মাসে একটি করে সাধারণ গভর্নিং বডির মিটিং ও জরুরি পরিস্থিতির উদ্ভব হওয়ায় অতিরিক্ত দুই একটি মিটিং দিয়ে সম্মানির হরিলুট সম্ভব! যা সুস্থ বিবেকবান মানুষের বিবেককে নাড়া দেয়। আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। মনগড়া রিপোর্টটি পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, রিপোর্টটি করা হয়েছে অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে শুধুমাত্র সভাপতি ও অধ্যক্ষকে ব্যক্তিগত ও সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয় ভাতার নামে।
বিগত সরকারের সময়ে ২০১৯ সালে ডিআইএ প্রতিবেদন তৈরি করা হয় যা পরিচালনা পরিষদ ডিআইএ-এর রিপোর্টের ব্রডশিট জবাব প্রেরণের সময় বৃদ্ধির একটি দরখাস্ত ১২/০২/২০২৫ তারিখ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। ৩০/০১/২০২৫ তারিখ পরিচালনা পরিষদের সভায় ব্রডশিট জবাব প্রস্তুত করার জন্য ৫ (পাঁচ) সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। উক্ত কমিটির কাজ চলমান রয়েছে।
বিগত সরকারের সময় নিয়োগপ্রাপ্ত “তদবিরে নিয়োগ ১৯ শিক্ষক হয়েছেন ভোটার” প্রসঙ্গে যা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অসত্য। তাদেরকে বৈধভাবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বিধি (সংশোধিত)-২০১৯-এর বিধি মোতাবেক নিয়োগ দেওয়া হয়। একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে এ ধরনের রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। রিপোর্টে উল্লিখিত ১৯ জনকে যে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং কলেজের বিদ্যোৎসাহী সদস্য উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন ম্যাডামের স্বাক্ষরে ভোটার তালিকা প্রকাশ ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জমি সংক্রান্ত দুর্নীতির বিষয়টি ২০১৯ সালের ঘটনা হলেও বর্তমান প্রশাসন অনুসন্ধান করার জন্য ১২/০১/২০২৫ তারিখে পরিচালনা পরিষদের সভায় ৫ (পাঁচ) সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। উক্ত কমিটির কাজ চলমান রয়েছে।
কলেজের বর্তমান সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী মাত্র ৫ (পাঁচ) মাস দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এতো অল্প সময়ে বিগত সরকারের দুর্নীতির তদন্ত করে বিচার করা তার জন্য কঠিন। তারপরও কলেজ অত্যন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু প্রতিবেদক তার পরিপূর্ণ বক্তব্য প্রকাশ না করে খণ্ডিত বক্তব্য প্রকাশ করেছেন, যা দুঃখজনক। শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ এই মিথ্যা প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
জেডএস