আগুনে পুড়ল ঈদ আনন্দ

সড়কের পাশে পড়ে আছে পোড়া কাপড়ের বান্ডিল। দুজন বাল্ডিলগুলো নড়াচড়া করে দেখছেন, তুলনামূলক কম পোড়া বান্ডিলগুলো আলাদা করে রাখছেন তারা। তাদের পাশে বিষণ্ন মনে দাঁড়িয়ে কাজের তদারকি করছেন একজন, চোখে মুখে চিন্তার চাপ।
এগিয়ে গিয়ে জানতে পারলাম তিনি পুড়ে যাওয়া কাপড়গুলোর মালিক নাছির উদ্দীন চৌধুরী। জিজ্ঞেস করতেই বললেন, ‘ঈদের আনন্দ শেষ হয়ে গেছে। হঠাৎ করেই এতো বড় ধকল সামলে নিতে কষ্ট হবে।’
গোডাউনে আগুন লাগার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ইফতার করার পরপরই আগুন লাগার খবর পাই। দৌড়ে গিয়ে দেখি আগুন ছড়িয়ে পড়েছে গোডাউনে। এরপর ফায়ার সার্ভিস এসে আসে। এরমধ্যেই গোডাউনের দুটি রুমের কাপড় পুড়ে গেছে।
সোমবার (১৭ মার্চ) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টেরিবাজারের খাজা মার্কেটকের সামনের সড়কে পড়ে আছে পোড়া কাপড়ের বান্ডিল। ফায়ার সার্ভিসের ছিটানো পানিতে ভেজা কাপড়গুলো কিছু আংশিক পুড়ে যাওয়া। সেখান থেকে তুলনামূলক কম পোড়া কাপড়ের বান্ডিলগুলো সরিয়ে রাখছে দোকানের দুই কর্মচারী। পথচারীরাও আগ্রহ নিয়ে দেখছেন, কোন গোডাউনে আগুন লেগেছে, কত টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে; তা নিয়েও তাদের আগ্রহ।
নাছিরের ছোট ভাই ঢাকা পোস্টকে বলেন, এক দেড় কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আরও কিছু কাপড় ফায়ার সার্ভিসের পানিতে ভিজে গেছে। সেগুলোও আর বিক্রির মতো অবস্থা নেই। আমরা ধারণা করছি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কম পোড়া কাপড়গুলো থলে বানানোর জন্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেরিবাজারের নূর মার্কের নাজিম অ্যান্ড ব্রাদার্সের গোডাউন ছিল খাজা মার্কেটের দ্বিতীয় তলায়। গোডাউনে আগুন লাগে রোববার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রামের উপসহকারী পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে টেরিবাজারের ২য় তলায় আগুন লাগার সংবাদ পাই। নন্দনকানন, চন্দনপুরা ও আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের ৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আগুনে একটি গোডাউনের দুটি কক্ষে রাখা মালামাল পুড়ে গেছে। অগ্নি নির্বাপণের সময় পানি পড়ে আশেপাশের দুয়েকটি গোডাউনেরও মালামাল ক্ষতি হয়েছে। ১০টা ৪০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
আরএমএন/এমএন