সাইরেন বাজিয়ে মানববন্ধনে অ্যাম্বুলেন্স মালিক-চালকরা, সড়কে আতঙ্ক

অ্যাম্বুলেন্স নীতিমালা- ২০২৩ বাতিল ও সংশোধনের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে ব্যক্তিমালিকানাধীন অ্যাম্বুলেন্স মালিক, চালক ও কর্মীরা। এই মানবন্ধনে অংশ নিতে নিজেদের অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন বাজিয়ে আসেন তারা। হঠাৎ অনেকগুলো অ্যাম্বুলেন্স এভাবে সাইরেন বাজিয়ে চলাচল করায় সড়কে চলাচলকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে 'অ্যাম্বুলেন্স মালিক, চালক ও কর্মীবৃন্দের ব্যানারে এই মানববন্ধন করেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর ২টার দিকে হঠাৎ ৯টি অ্যাম্বুলেন্স সারি বেধে সাইরেন বাজাতে বাজাতে কদম ফোয়ারা মোড় থেকে পল্টন মোড় হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থামে। এরপর পৃথকভাবে দলবেঁধে আরো অন্তত ১৭টি অ্যাম্বুলেন্স সাইরেন বাজিয়ে সেখান আসে। এরপর দুপুর আড়াইটায় তারা মানববন্ধন শুরু করে। পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মানববন্ধন শেষে আবার সাইরেন বাজাতে-বাজাতে কদম ফোয়ারা মোড়ের দিকে চলে যায় তারা।
সড়কে চলাচলকারী প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হঠাৎ অনেকগুলো অ্যাম্বুলেন্স সাইরেন বাজিয়ে ছুটে চলায় মনে হয়েছে কোথাও বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। পরে দেখা গেল তারা মানববন্ধন করতে এসেছে। রোগী ছাড়া এভাবে সাইরেন বাজানো উচিত নয়।
প্রেসক্লাবের সামনে চায়ের দোকান চালান রুবেল। তিনি বলেন, প্রথমে ভেবেছি কোথাও বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। পরে দেখি তারা প্রেসক্লাবের সামনে এসেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পথচারী বলেন, এভাবে অ্যাম্বুলেন্সকে ছুটতে দেখেছি জুলাই আন্দোলনের সময়। বড় কিছু হলেই এমন দৃশ্য দেখা যায়। কিন্তু শুধু মানববন্ধন করার জন্য তাদের এমনভাবে চলাচল করা উচিত নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেসক্লাবের সামনে দায়িত্বে থাকা শাহবাগ থানার পেট্রোল ইন্সপেক্টর (পিআই) সরদার বুলবুল আহমেদ বলেন, রোগী ছাড়া অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন বাজানোর নিয়ম নেই। কিন্তু কয়েকটি অন্যায্য দাবি নিয়ে তারা মানববন্ধন করতে সাইরেন বাজিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে এসেছেন। এতগুলো অ্যাম্বুলেন্স সাইরেন বাজিয়ে আসায় পথচারীদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। আয়োজকদের সাইরন বাজিয়ে না যাওয়ার জন্য বলেছি।
তবে মানববন্ধনকারীদের যাওয়ার সময়ও সাইরেন বাজিয়ে যেতে দেখা যায়।
মানববন্ধন থেকে তারা ৭ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো—
১. ব্যক্তি মালিকানাধীন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসকে স্বীকৃতি দিয়ে নীতিমালাটি সংশোধন করুন।
২. রূপান্তরিত অ্যাম্বুলেন্সগুলোর মানোন্নয়নে সময় ও আর্থিক সহায়তা দিন।
৩. কোম্পানিভিত্তিক পরিচালনার বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করে সহজ ও বাস্তবসম্মত বিকল্প দিন।
৪. এই নীতিমালার বাস্তবায়ন স্থগিত করে পূনঃমূল্যায়নের উদ্যোগ নিন।
৫. জাতীয় জরুরি সেবা হিসেবে অ্যাম্বুলেন্স থেকে অগ্রিম আয়কর বাতিল করুন।
৬. রিট পিটিশন ৪৭২৩/২০২৩ অনুযায়ী অ্যাম্বুলেন্সের 'ভাড়ায় চালিত নয়' শর্ত বাতিল করুন।
৭. ২৪ ঘণ্টা জাতীয় জরুরি সেবা অ্যাম্বুলেন্সের জন্য সব ধরনের ফুয়েল গ্যাস নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিন।
ওএফএ/এমজে