কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ঢাবি শিক্ষার্থীদের

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) চলমান শিক্ষার্থীদের উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে একদফা আন্দোলনে সাথে সংহতি প্রকাশ করে শাহবাগ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।
আজ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাত দশটায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে বিশাল এক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকেন।
এসময় তারা- ‘কুয়েট ভিসি করে কি, গোলামি আর দালালি’, ‘ দফা এক দাবি এক, কুয়েট ভিসির পদত্যাগ’, ‘ব্লকেড ব্লকেড, শাহবাগ ব্লকেড’, ‘আমার ভাই অনশনে, প্রশাসন কি করে?’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
ঢাবি বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের এক দফা, এক দাবি। কুয়েটের দালাল ভিসি পদত্যাগ না করলে আমরা ব্লকেড কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’
ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মুশফিকুজ্জামান বলেন, “রক্তে ঝরা বাংলাদেশে ভালোভাবে কোনো অধিকার আদায় হয় না, তাই বাধ্য হয়ে আমরা এই পথ বেছে নিয়েছি। কিছু সময়ের জন্য জনদুর্ভোগ হলেও এর মাধ্যমে যদি দালাল ভিসির পদত্যাগ হয় তাহলে তা কুয়েটসহ সব ক্যাম্পাসের জন্য আশারবাণী এবং দখলবাজদের জন্য হুঁশিয়ারি।”
পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান রাফি বলেন, “দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে আর কিছু করার থাকে না। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেও আশানুরূপ কোনো ফল পাইনি। উপদেষ্টা পরিষদে দু’জন ছাত্র থাকার পরও তারা কুয়েট ছাত্রদের জন্য কোন কথা বলছে না। তাই আমরা আজ এই শাহবাগ ব্লকেড কর্মসূচির পথ বেছে নিয়েছি। কুয়েট ভিসিকে অপসারণ না করলে আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
এদিকে কুয়েটের উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে আজ মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, “কুয়েট ভিসির পদত্যাগ চাই। তিনি যদি লজ্জায় পদত্যাগ করার মতো ব্যক্তিত্ব না রাখেন, তাহলে তাঁকে বাধ্যতামূলকভাবে সরানো হোক।”
জানা গেছে, সম্প্রতি কুয়েটে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল-যুবদলের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়। এতে অনেকে আহত হন। এ ঘটনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৩ এপ্রিল বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
এমন অবস্থার মধ্যে ১৪ এপ্রিল রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা করে সহিংসতার ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া বন্ধ থাকা শিক্ষা কার্যক্রম ৪ মে ও আবাসিক হলগুলো ২ মে খোলার ঘোষণা দেওয়া হয়।
এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রাতেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। তারা পরদিন ১৫ এপ্রিল দুপুরে একের পর এক হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। সেই সঙ্গে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন।
টিআই/এসএমডব্লিউ