সুফি মিজানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি

ইসলামের সুফিতাত্ত্বিক মরমী গবেষক, পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে ভিত্তিহীন ও মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
বুধবার (৭ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে ‘সর্বস্তরের সুফিবাদী সুন্নি জনতা বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ অভিযোগ করা হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পপতি সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান শুধু একজন সফল শিল্পপতি নন, তিনি একজন সুফিবাদী ধার্মিক সুন্নি মুসলমান। সম্পদ তাকে অহংকারী করেনি, বরং আরও সহনশীল, পরোপকারী ও দানশীল করে তুলেছে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সমাজে তিনি একজন সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত ব্যবসায়ীর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং ও বীমা সেক্টরে পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের কোনো চেক ডিজঅনার হওয়ার রেকর্ড নেই উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক খাত থেকে নেওয়া ঋণের ক্ষেত্রে তিনি কখনোই খেলাপি হননি। তিনি দেশের ব্যবসায়ী সমাজে একটি বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, যা ব্যাংকারদের মধ্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত।
তারা আরও বলেন, পিএইচপি কুরআনের আলো, আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সম্মেলন এবং আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তিনি ইসলামের শাশ্বত আদর্শ, মৌলিক ঈমান-আক্বীদাহ, নৈতিক শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। তার বহুমুখী ও বহুমাত্রিক অবদান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিস্তৃত।
তিনি বহু মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, হিফজখানা, এতিমখানা ও অসংখ্য শিক্ষা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা, সংস্কার ও সম্প্রসারণে অনন্য অবদান রেখেছেন। রাজধানী ঢাকায় ইউআইটিএস এবং নারায়ণগঞ্জের কাঞ্জনে অসহায় ও দুস্থদের কল্যাণে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি প্রকাশ্যে ও গোপনে অসংখ্য শিক্ষার্থীর পড়ালেখার খরচ বহন করে আসছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল, কিডনি ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন জনহিতকর প্রতিষ্ঠানে তার অসাধারণ অবদান রয়েছে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মিজানুস সালাম জামে মসজিদ’ প্রতিষ্ঠা করে তার পরিচালনায় যাবতীয় ব্যয় বহন করে থাকেন।
তারা বলেন, বিশ্বের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় মিশরের আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি মেধাবী ছাত্রদের তিনি বৃত্তি দিয়ে সহায়তা করেন এবং ভর্তিচ্ছু ছাত্রদের জন্য কোচিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও আরবি ভাষা ও সাহিত্যে দক্ষতা অর্জনের জন্য ‘মিজানুস সালাম আরবি ভাষা ও ইফতা কোর্স’ চালু করেন। তিনি প্রতিবছর অনেককে হজ, উমরাহ ও মদিনা মুনাওয়ারা জিয়ারতের ব্যবস্থা করে দেন এবং হজযাত্রীদের বিমানবন্দরে আপ্যায়নের ব্যবস্থাও করেন। করোনা মহামারির সময় তিনি কোভিড আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ও তাদের পরিবারে খাদ্য সরবরাহ করেন।
এর আগে বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক কামাল উদ্দিন। তিনি বলেন, ওই সময়ে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও সুফি মিজান কাউকে তার প্রতিষ্ঠানে চাকরিচ্যুত করেননি। বরং বন্যাদুর্গত মানুষদের নিজের কারখানায় আশ্রয় দিয়ে খাবারের ব্যবস্থা করেন এবং ত্রাণ বিতরণ করেন। সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ তহবিলেও তিনি দান-অনুদান প্রদান করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের চেয়ারম্যান আল্লামা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফী, মুফতি অছিয়র রহমান, সিরাজুল মোস্তফা, মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ একরামুল করিম এবং শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের অর্থ সম্পাদক আবদুল হাই মাসুম।
এমআর/এমজে