দ্রুততম সময়ে পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কার প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ওপর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দমন পীড়ন বন্ধ ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কার প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশন।
বুধবার (১৪ মে) সংগঠনটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বার্তায় বলা হয়, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) বিদ্যমান দীর্ঘদিনের সংকট সমাধানে সরকারের গ্রহণকৃত সংস্কার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত/ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য সমিতি জনবলের ওপর আরইবির চলমান জুলুম, দমন-পীড়ন ও নির্যাতন ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। গত ২৪ জানুয়ারি থেকে এক ও অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়ন করে একীভূতকরণ এবং সব অনিয়মিতদের নিয়মিত করণের দাবি করায় পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কর্তৃক বিনা নোটিশে ২৯ জনকে চাকরিচ্যুত, মামলা-রিমান্ড-গ্রেপ্তার, বরখাস্ত ও সংযুক্তির পাশাপাশি গত ৪ মাসে প্রায় ৪ হাজার সহকর্মীকে শাস্তিমূলকভাবে বদলি করা হয়েছে। মূলত সংস্কার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে এ বদলি করা হচ্ছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে ব্যাপক জনবলের ঘাটতি রয়েছে। স্বল্প জনবল দিয়ে বর্তমানে কালবৈশাখীর ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম ও তীব্র তাপদাহে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা চালু রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, সেখানে এই ধরনের গণ-বদলির কারণে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও গ্রাহক সেবা চরমভাবে বিঘ্নিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। এসব সত্ত্বেও গত ১২ মে আরইবি কর্তৃক ৯০ জন জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার সহ আরও ৩৯৫ জন লাইনক্রুকে হয়রানি ও শাস্তিমূলক বদলি আদেশ জারি করা হয়েছে। বছরের মাঝামাঝি সময়ে এবং ঝড় বৃষ্টির মৌসুমে বিদ্যুৎ কর্মীদের এমন গণবদলি নজিরবিহীন।
বার্তায় আরও বলা হয়, ২০২৪ সালে জানুয়ারি থেকে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা আরইবির অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, শোষণ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে দুই দফা দাবি নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি আন্দোলন করে আসছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্দোলনের যৌক্তিকতা উপলব্ধি করে সংকট সমাধানে উদ্যোগ নিলেও আরইবি সরকারের এই কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর প্রতিনিয়ত এ ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অব্যাহত রেখেছে। ইতঃপূর্বে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে আরইবির এ ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের সহযোগিতা চাওয়া হলেও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ন্যূনতম কোনো পরিবর্তন বা বিদ্যুৎ বিভাগের দৃশ্যমান তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। এমনকি সংস্কারের লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হলেও দীর্ঘ প্রায় ৭ মাসেও প্রতিবেদন দাখিল হয়নি, যা পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারে উদাসীনতা বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দাবিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে চাকরিচ্যুতদের স্বপদে চাকরিতে পুনর্বহাল, সংযুক্ত ও সাময়িক বরখাস্তদের স্বপদে বহালসহ বিশেষজ্ঞ কমিটির পল্লী বিদ্যুৎ সংস্কারের রিপোর্ট জনসম্মুখে প্রকাশ করে অগ্রগতি প্রদর্শন করার দাবি জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন
একইসঙ্গে সব চুক্তিভিত্তিক/অনিয়মিতদের নিয়মিতকরণসহ বর্তমান ঝড়-বৃষ্টির মৌসুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা অক্ষুণ্ন রাখা, লাইনক্রুদের মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য লাইনক্রুদের বদলি আদেশ বাতিল করাসহ ইতঃপূর্বে হয়রানিমূলক সব বদলি আদেশ প্রত্যাহার করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সুষ্ঠু ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের জন্য বিআরইবি চেয়ারম্যান, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং বিদ্যুৎ উপদেষ্টা সহ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
ওএফএ/এমএন