প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

গত ২৭ মে ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত ‘মোহাম্মদপুরে প্রকাশ্যে গুলি: নেতৃত্বে পিচ্চি হেলালের সহযোগী জাহিদ মোড়ল!’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর সংক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ পাঠিয়েছেন মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন।
নিজেকে যুবদলের ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক দাবি করা মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন প্রতিবাদলিপিতে দাবি করেন, “প্রচারিত সংবাদে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নাই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, শেরশাহ সুরি রোডে এক ব্যবসায়ীর অফিসে গুলি করা ব্যক্তির আমার সহযোগী এবং তারা আমার ‘লোক’। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা । ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত রুবেল, শাওন বা জাভেদ- তারা কেউই আমার রাজনৈতিক কর্মী নয় এবং কোনোভাবে আমার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। অত্র এলাকাবাসী সবাই জানে তারা সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের মন্ত্রী ‘শ ম রেজাউল করিম’- এর বাহিনী এবং তার বডিগার্ড হিসেবে কাজ করত। আওয়ামী লীগের এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আমাদের সংগঠনের কর্মী হতেই পারে না। সংবাদে উল্লিখিত ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয় থানাকে ইতিপূর্বে অবহিত করা হয়েছে, আবার উক্ত ঘটনায় জড়িতদের নামে থানায় মামলা হয়েছে এবং অনেকেই গ্রেপ্তারও হয়েছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, প্রতিবেদনে প্রকাশিত কথিত ‘নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক’ সূত্র ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক ডিশ ব্যবসায়ীর মাধ্যমে আমি মনির আহমেদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং এতে সন্দেহ তৈরি হয়। প্রকৃত সত্য হলো, যখনই আমি জানতে পারি এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে তখন আমি মনির ভাইয়ের নাম্বারে ফোন দিয়ে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম। মনির হোসেনকে (মনির আহমেদ) জিজ্ঞাসা করলেই জানা যাবে উক্ত ফোন আলাপে কোনো প্রকার হুমকি, চাপ বা অসৎ উদ্দেশ্য ছিল কি না।
‘লালমাটিয়ার ডিশ ব্যবসার অফিস ও বর্জ্য অপসারণ ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা’ দাবি করে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা থাকার দাবিটি মিথ্যা ও বানোয়াট। আমার বিরুদ্ধে কেবল রাজনৈতিক কারণে যা ১/১১ থেকে শুরু করে গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত দায়ের করা শতাধিক মামলা রয়েছে।’
‘ইমামুল হাসান হেলালের সাথে আমার রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি প্রতিবাদলিপিতে আরও দাবি করেন, ‘উনি (ইমামুল হাসান হেলাল) বৃহত্তর মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, যা বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্বাভাবিক। আমরা উভয়েই বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত। একসাথে ছবি থাকায় কাউকে অপরাধী বানানো যায় না। কারণ, সামাজিক এবং রাজনৈতিক ও সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে ছবি তোলা খুবই স্বাভাবিক বিষয়।’
তিনি আরও দাবি করেন, সংবাদ প্রকাশের আগে তার কোনো বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হয়নি।
মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন দাবি করেন, তিনি সন্ত্রাসী নন এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কখনও যুক্ত ছিলেন না এবং এখনও নন। তিনি বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সাংগঠনিক নিয়ম মেনেই রাজনীতি করে আসছেন। তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রাবস্থা থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়ে বর্তমানে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব সফলতার সহিত পালন করছেন। তিনি বারংবার কারাবরণ করেছেন এবং তার পরিবার অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশার শিকার হলেও তিনি এবং তার পরিবার বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি কখনও।
প্রতিবাদলিপিতে তিনি অনুরোধ করেন, ‘যারা আমার চরিত্র হননে অপচেষ্টায় লিপ্ত তাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ, এহেন অপচেষ্টা থেকে নিজেদের বিরত রাখুন এবং দেশ ও জনগণের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষার সংগ্রামে আমাদের সহযোগিতা করুন।’
প্রতিবেদকের বক্তব্য
প্রতিবেদনে প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো বক্তব্য নেই। সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এবং ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদনটি দাঁড় করানো হয়েছে।
প্রতিবেদনটি করতে গিয়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন ওরফে জাহিদ মোড়লের ব্যবহৃত পাঁচটি নম্বরে (দেশি ও বিদেশি নম্বর, প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে) একাধিকবার কল দেওয়া হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। অথচ গুলির ঘটনায় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আসামিদের সঙ্গে তার একাধিকবার যোগাযোগের তথ্য এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলার তথ্য-প্রমাণও সংরক্ষিত আছে এ প্রতিবেদকের কাছে।
এছাড়া চাঁদাবাজি ও জমি দখলের অডিও রেকর্ড এবং গ্রেপ্তার আসামিদের সঙ্গে তার একাধিক ছবিও সংরক্ষিত আছে প্রতিবেদকের কাছে।
এমএআর/
