জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে মৌ

পারিবারিক কলহের জেরে সিহাবুন মুবিন মৌ (৩২) নামে এক গৃহবধূ শরীরের কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। রোববার (৬ জুন) রাতে রাজধানীর মিরপুর সেকশন-৬ এ নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর সিহাবুন মুবিন মৌকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরের ৪৬ ভাগ দগ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
এদিকে আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় দগ্ধ গৃহবধূর ‘স্বামী’ ইরফান হাইউমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ।
দগ্ধ মৌয়ের আত্মীয় হালিমা ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইরফান ও মৌ একসময় একটি বেসরকারি টেলিভিশনে চাকরি করতেন। ২০০৮-২০০৯ সালের দিকে তাদের মধ্যে পরিচয় হয়। এরপর দুজনই অন্য জায়গায় বিয়ে করেন। এর মধ্যে ইরফান প্রথমে খ্রিস্টান মেয়েকে বিয়ে করেন। ওই সংসারে তার একটি সন্তান রয়েছে। এরপর আরও একটি বিয়ে করেন, পরের সংসারে দুই সন্তান রয়েছে ইরফানের। অন্যদিকে মৌয়ের বিয়ে হয়েছিল ২০১১ সালে। এরপর ২০১৭ সালে বিচ্ছেদ হয়।
তিনি আরও বলেন, গতকাল (রোববার) রাতে আমরা খবর পাই মৌকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। ওই সময় ইরফান মৌকে তার স্ত্রী পরিচয় দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে। শুনেছি মৌ ইরফানকে দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দিতে বলেছিল। এ নিয়ে ঝগড়ার জেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করতে পারে সে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, পরিচয়ের শুরুতে ইরফান বেকার ছিলেন। পরে দুজনেই অন্য জায়গায় বিয়ে করেন। ডিভোর্সের পর ইরফানের সঙ্গে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপন করেন মৌ। এমনকি গোপনে বিয়েও করেন তারা। সম্প্রতি মৌ দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার জন্য ইরফানকে চাপ দেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। রোববার রাতে মিরপুর সেকশন ৬ এর ২ নম্বর রোডে নিজ বাসায় কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন মৌ।
মৌয়ের স্বামী ইরফান পুলিশের হেফাজতে থাকায় তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এসএম আইউব হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মৌয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। এইচডিইউর ৮ নম্বর বেডে তার চিকিৎসা চলছে। শরীরের ৪৬ ভাগ দগ্ধ হয়েছে। যেকোনো সময় তার অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে পাঠানো হবে।
মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনজুর রাহি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বিষয়টি জানার পর তদন্ত শুরু করি। বার্ন ইনস্টিটিউটে গিয়ে দগ্ধ মৌয়ের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। মৌ জানিয়েছেন, তিনি নিজেই কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। এর বেশি তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। আমরা ইরফানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছি। এ ঘটনায় এখনও মামলা দায়ের করা হয়নি।
এসএএ/এসকেডি