আগারগাঁও-মিরপুর সড়কের খানাখন্দ মেরামতে উদ্যোগ নেই

রাজধানীর অন্যান্য এলাকায় সড়কে বড় ভোগান্তি হয় যানজট ও জলাবদ্ধতায়। আগারগাঁও থেকে মিরপুরের সড়কে ভোগান্তির চিত্র একটু ভিন্ন। এখানে মেট্রো রেলের কাজের কারণে কয়েক বছর ধরেই চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন আশপাশের বাসিন্দারা। শুকনো সময়ে ধুলাবালি আর বৃষ্টির সময়ে খানাখন্দের যন্ত্রণা ও জলাবদ্ধতা তাদের নিত্যসঙ্গী।
উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো রেলের প্রথম প্রকল্প এমআরটি লাইন-৬ এর কাজ এখনো চলছে। প্রকল্পের উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের মোট দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এই অংশে মোট স্টেশন রয়েছে ৯টি। এই প্রকল্পের কাজের কারণে আগারগাঁও থেকে মিরপুর ১০ হয়ে পল্লবী পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই খারাপ। মাঝেমধ্যে লোকদেখানো সংস্কার করা হলেও এই সড়কের চিত্র খুব একটা পাল্টায়নি। এই পথে চলাচলকারী মানুষের দুর্ভোগের কোনো শেষ নেই। সড়কের দুই পাশের দোকানপাট, শপিং মল, ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক দিন ধরেই একরকম বন্ধ।
শেওড়াপাড়ার নুরুল নামের এক ব্যবসায়ী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে দুর্দিন নেমে এসেছে। গরমের সময় ধুলাবালি ও বর্ষার সময় পানি জমে চরম ভোগান্তি সৃষ্টি হয়। এর পাশাপাশি রাস্তা ভাঙা এবং বড় বড় গর্ত হওয়াতে প্রায়ই ছোট-খাট দুর্ঘটনা ঘটছে। কাস্টমাররা এত ভোগন্তি নিয়ে এখানে আসতে চান না।

তিনি বলেন, বর্তমানে মেট্রোরেলের নিচে কোনো কাজ নেই। তারপরও কর্তৃপক্ষ এই রাস্তাটা মেরামত করছে না। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এ এলাকার লোকজনকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শিগগিরই যদি আগারগাঁও থেকে মিরপুরের এই রাস্তাটি মেরামত না করা হয় এবং ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা না হয়, তাহলে বৃষ্টির সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বেসরকারি চাকরিজীবী মো. রতন মিয়া বলেন, আমি প্রতিদিন এই রাস্তায় যাওয়া-আসা করি। আমি নিজেই মিরপুর-১২ নম্বর থেকে আগারগাঁও রাস্তায় ছোট-বড় দুর্ঘটনা প্রতিদিনই দেখছি। বিশেষ করে বৃষ্টি হলে এই রাস্তায় সিএনজি-রিকশা উল্টে যাওয়ার ঘটনা বেশি ঘটে।

খায়রুল নামের এক রিকশাচালক বলেন, মেট্রোরেলের কাজ শুরুর পর এখন পর্যন্ত এই রাস্তার বেহাল দশা। ঠিক করার কোনো উদ্যোগ নেই। যার ফলে মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। আমি নিজেও অনেকবার রিকশা নিয়ে উল্টে পড়েছিলাম।
সোমবার (৭ জুন) সরেজমিনে দেখা গেছে, আগারগাঁও থেকে মিরপুর-১২ নম্বর পর্যন্ত রাস্তায় ছোট-বড় খানাখন্দের অভাব নেই। এই রুটের করুণ পরিস্থিতির কারণে প্রতিদিনই শেওড়াপাড়া থেকে মিরপুর-১০ পর্যন্ত রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া মিরপুর-১০ নম্বর গোলচক্কর থেকে মিরপুর-১২ নম্বর ও পল্লবী অংশের রাস্তাও ভাঙাচোরা।

ঢাকার যানজট নিরসন ও নগরবাসীর যাতায়াত দ্রুত ও নির্বিঘ্ন করতে ২০১২ সালে গৃহীত হয় মেট্রোরেল প্রকল্প। যাত্রী নিয়ে ঘণ্টায় ১শ কিলোমিটার বেগে ছুটবে এ ট্রেন। উভয়দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহনের সক্ষমতা থাকবে মেট্রোরেলের।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধনের কথা রয়েছে।
এসআর/এইচকে/জেএস