পিলখানা ট্র্যাজেডি : এখন পর্যন্ত ১৫৮ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছে তদন্ত কমিশন

পিলখানা ট্র্যাজেডির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৫৮ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান। তিনি বলেছেন, আরো প্রায় ৫০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ বাকি আছে।
বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সংঘটিত বিডিআর বিদ্রোহে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
ফজলুর রহমান বলেন, এই ঘটনায় বেঁচে ফেরা ১৫ জন সেনা কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আরো ৫০ জন সেনা কর্মকর্তাকে লিখিত জবানবন্দি দিতে সেনা সদরের মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এর বাইরে দুটি সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে সার্বিক বিষয়ে মতবিনিময় করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ৮ জন রাজনীতিবিদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জনের সাক্ষাৎকার জেলখানায়, ৩ জন সরাসরি উপস্থিত হয়ে এবং বাকি ২ জন পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা ই-মেইলের মাধ্যমে জবানবন্দি দিয়েছেন।
এছাড়া, পিলখানা ট্র্যাজেডির সময় বা তার পরবর্তী সময়ে যেসব সামরিক কর্মকর্তা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন, তাদের মধ্য থেকে ৫৫ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন সাবেক সেনাপ্রধান, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী প্রধান, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান এবং অন্যান্য উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত বা সংশ্লিষ্ট আরো ২০ জন সাংবাদিক, সরকারি আমলা ও আগের তদন্ত কমিটির সদস্যদের সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়েছে। তৎকালীন আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার এবং অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কমিশনের সভাপতি জানান, ব্যবসায়ী, টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞসহ অন্যান্য পেশার ৯ জন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, যাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া কারাগারে দণ্ডপ্রাপ্ত ২৫ জন বিডিআর সদস্যের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন এবং কারা জড়িত ছিল সে সম্পর্কেও বিভিন্ন তথ্য দিয়েছেন, যেগুলো বর্তমানে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ২৯ জন কারামুক্ত বিডিআর সদস্যের সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়েছে।
মেজর জেনারেল (অব.) ফজলুর রহমান বলেন, এই তদন্তে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তাও নেওয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে ঢাকায় অবস্থিত ৬টি দেশের দূতাবাস ও জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় থেকে তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, পিলখানা ট্র্যাজেডি সংক্রান্ত কোনো তথ্য যার কাছে আছে, সেই ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গণমাধ্যমকে কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এমএইচএন/জেডএস