‘সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন’

বাংলাদেশে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে বাজেট বরাদ্দ অত্যন্ত অপর্যাপ্ত। এর একটি বড় অংশ দরিদ্রদের কাছে পৌঁছায় না। এই সমস্যা সমাধানের জন্য দারিদ্র্য বিমোচনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয় এমন কর্মসূচিগুলোকে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া উচিত। এই খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত ‘বৈষম্য নিরসনে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি ও জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন- খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সভাপতি মহসিন আলী, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান খান, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক এস এম জুলফিকার আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চের সাবেক চেয়ারম্যান এম এম আকাশ, খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের উপ-পরিচালক কানিজ ফাতেমা প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় মহসিন আলী বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সবার আশা-আকাঙ্ক্ষার যে সরকার গঠিত হয়েছে, দেখার বিষয় তারা কীভাবে সামাজিক সুরক্ষায় কাজ করবে। ২০১৫ সালে সামাজিক সুরক্ষায় এনএসএসএস চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে একটা ভালো উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে বাস্তবে এ প্রক্রিয়ায় সুবিধাভোগী নির্বাচন এখনো ধোঁয়াশাই রয়ে গেছে। সামাজিক সুরক্ষার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করা। খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ থেকেও আমরা খাদ্য অধিকার এবং খাদ্য নিরাপত্তা আইনের কথা জোরালোভাবে বলে আসছি। আমরা হতাশ নই। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে খাদ্য অধিকারকে অগ্রাধিকার দিয়ে আমাদের জায়গা থেকে আমরা কাজ করে যাবো।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. সাইদুর রহমান খান বলেন, আমাদের বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, বেদে জনগোষ্ঠীসহ অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ডাটাবেজ রয়েছে। সেখানে প্রায় ৩৬ লক্ষ প্রতিবন্ধী রয়েছেন। সামাজিক সুরক্ষায় ২০১৩ সালের নীতিমালা রয়েছে সেগুলো দিয়ে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। বিভিন্ন ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে শুধু মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান নগদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে যারা জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে। আমরা দুদকের মাধ্যমে মামলা দিয়ে এই দায়িত্ব থেকে তাদের অব্যাহতি দিয়েছি। বর্তমানে ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে অভিযোগের মাত্রা কমে এসেছে। একই ব্যক্তি যাতে দুই জায়গায় ভাতা নিতে না পারেন, দ্বৈততা পরিহারে আমরা কাজ করছি।
অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কী, কাকে দেবো, কীভাবে দেবো সেগুলো নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। প্রয়োজনে সামাজিক উদ্যোগকে কাজে লাগাতে হবে, রাষ্ট্রের ওপর চাপ কমাতে হবে। সমাজে যারা বাস করে বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ যারা আয় করতে পারছে না তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের পাশাপাশি পরিবার থেকে আয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। দরিদ্ররা যদি স্বউদ্যোগে এগিয়ে আসে, তবেই সামগ্রিকভাবেই রাষ্ট্রের চাপ কমার সাথে সাথে সামাজিক উন্নয়ন তথা দেশের উন্নয়ন সম্ভব হবে।
ওএফএ/এমএ