আগুন লাগা মামুন প্লাজায় চলে ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যাল ব্যবসা

টিকাটুলি অভিসার সিনেমা হলের বিপরীতেই ১২ তলা বিশিষ্ট মামুন প্লাজা। ভবনটির নিচ থেকে তিন তলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক হিসেবে ভাড়া দেওয়া। চতুর্থ তলা থেকে ১২ তলা পর্যন্ত মোট ৫২টি ফ্ল্যাট। যেখানে কয়েকশ মানুষের বসবাস। এমনই আবাসিক কাম বাণিজ্যিক ভবনের নিচের তিনটি ফ্লোরকে মার্কেট বলা হলেও অধিকাংশই কেমিক্যালের গোডাউন।
নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে আবাসিক কাম বাণিজ্যিক ওই মামুন প্লাজায় অবৈধভাবে চলছে কেমিক্যালের ব্যবসা। যেসব কেমিক্যাল পণ্য সেখানে বিক্রি করা হয় তা আগুন জ্বলতে ও জ্বালাতে সহায়তা করে। এমনকি আগুন লাগলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটার মতো বিস্ফোরক জাতীয় পণ্যও বিক্রি করা হয়।
বুধবার (২ জুলাই) ভোর ৫টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী বিভাগের টিকাটুলি মামুন প্লাজার তৃতীয় তলায় একটি কেমিক্যালের গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ভোর ৫টায় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের সাত ইউনিটের চেষ্টায় সকাল ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

আগুন নেভাতে গিয়ে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিসকে। ছোট আগুন মনে করেই নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে গিয়ে বিপাকে পড়ে ফায়ার ফাইটাররা। টের পান দাহ্য পদার্থের আলামত। সেখানে যে কেমিক্যালের গোডাউন রয়েছে তা জানায়নি ভবন মালিক কর্তৃপক্ষ বা ব্যবসায়ীরাও।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ভবনের মালিকের নাম আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি চট্টগ্রামে থাকেন। তার অবর্তমানে তার ভাই ও কর্মচারীরা ভবন দেখভাল করেন। যেখানে আগুন লেগেছিল সেই গোডাউনের নাম টিআর ট্রেড সেন্টার। এর মালিক তৌহিদুর রহমান।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, দাহ্য পদার্থ, কেমিক্যালের আলামত ও কেমিক্যাল পোড়ার মতো প্রচুর গন্ধযুক্ত ধোয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। কেমিক্যালের গোডাউনে আগুন লাগার বিষয়টি আঁচ করতে পারার পর অগ্নিনির্বাপনের কৌশল বদলে ফেলা হয়। বিস্ফোরণ ও ক্ষতিকর ধোঁয়া থেকে সুরক্ষা ও ঝুঁকিমুক্ত অগ্নিনির্বাপন চেষ্টার চিন্তায় পুরো ৯টি তলার আবাসিক বাসিন্দাদের বাইরে বের করে ফায়ার সার্ভিস। তারপর পানির সঙ্গে ফোম স্প্রে করে ধীরে ধীরে ধোঁয়া ও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এতে করেই মূলত সময় বেশি লেগে যায় আগুন নির্বাপনে।

কেমিক্যালের বিষয়টি জেনেই ভবন কর্তৃপক্ষ ও অগ্নিকাণ্ডের শিকার গোডাউন মালিক তৌহিদুর রহমান সাক্ষাৎ করেননি বলে জানান কর্তব্যরত ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।
বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে মামুন প্লাজায় গিয়ে দেখা যায়, সামনে ২/৩টি দোকান খোলা থাকলেও অধিকাংশ দোকান বন্ধ। ভেতরে ঢুকতেই রাসায়নিক পদার্থযুক্ত পানি ভেসে থাকতে আছে। কেমিক্যালের গন্ধ তখনও পুরো ভবনজুড়ে স্পষ্ট। নাক বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম। তিন তলাজুড়ে অন্ধকার। মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে ধোয়া-মোছা পরিস্কারের কাজ চলছিল সেখানে।
ফায়ার সার্ভিস তথ্য মতে, আবাসিক কাম বাণিজ্যিক ভবনে কেমিক্যাল বিক্রির দোকান বা গোডাউন রাখার কোনো সুযোগ নেই। কোনো না কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে লাইসেন্স থাকলেও কেমিক্যাল মজুদ বা বিক্রি সম্পূর্ণ অবৈধ এমন ভবনে।
এব্যাপারে জানতে কথা বলতে গেলেই খোলা থাকা বেশ কয়েকটি দোকান ও গোডাউন কর্তৃপক্ষ সাটার নামিয়ে একরকম পালাতে শুরু করেন। নিচতলায় খোলা থাকা প্যারাডাইজ সায়েন্টিফিক কোম্পানি লি. এ কথা বলতে চেষ্টা করা হলেও কেউ রাজি হননি। ভবন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মামুন প্লাজার পেছনে আবাসিক ফ্ল্যাটে যাওয়ার বড় প্রবেশপথ। সেখানে কথা হয় ভবনটির নিরাপত্তা কর্মী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ডিউটিতে আসছি বিকেলে। রাতে যারা ছিল তারা সব দেখেছে ও জানে।
গোবিন্দ নামে আরেক নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগুনের সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো আবাসিক ফ্লোরে ফ্লোরে। কেমিক্যালের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার পর ফায়ার সার্ভিস পুরো ভবনকে মানুষশূন্য করার নির্দেশনা দেওয়ার পর ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বাসিন্দারা নিচে নেমে আসেন।
গোবিন্দ অগ্নিনির্বাপন পরবর্তী পরিস্থিতি দেখিয়ে বলেন, এখন তো গন্ধ কম। সকালে তো টেকা যাচ্ছিল না। এতো গন্ধ। দেখেন ফায়ার সার্ভিসের দেওয়া পানির রঙ কীভাবে বদলে গেছে। এখানে কেমিক্যালের দোকান কম। গোডাউন বেশি। পাশেই অন্য ভবনে ব্যবসা এখানে গোডাউন ভাড়া নেওয়া। তিন তলার এমনই একটি গোডাউনে লেগেছিল আগুন।

ভেতরে মার্কেট সংলগ্ন গেট দিয়েই আবাসিক ও বাণিজ্যিক অংশের লোকজনদের জন্য রয়েছে একটি মসজিদ। সেটি কেমিক্যালযুক্ত পানিতে ভেসে গেছে। ভেতরে ক্ষতিগ্রস্ত গোডাউনের ভেতর ও বাইরে ফ্লোর এবং সিঁড়িতে দেখা যায় পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছে শ্রমিকরা। তবে তাদের সবার মুখে যেন কুলুপ। আগুন ও গোডাউন সম্পর্কে তথ্য দিতে প্রত্যেক শ্রমিক নারাজ।
কী ধরনের কেমিক্যাল ছিল মামুন প্লাজার সেই গোডাউনে?
অগ্নিনির্বাপন কার্যক্রমে অংশ নেওয়া এক ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা বলেন, সেখানে আমরা সোডিয়াম ক্লোরাইড, সোডিয়াম বেনজয়েট (Sodium benzoate), হাইড্রোজেন সালফাইট, অ্যাসিডিক অ্যাসিড ও মিথাইলের মতো কেমিক্যালের উপস্থিতি পেয়েছি। এরমধ্যে কম বেশি সবই ফ্লেমেবল ছিল। তবে মিথাইল সবচেয়ে ক্ষতিকর। কারণ মিথাইল (বিশেষ করে মিথানল) দাহ্য পদার্থ এবং অক্সিজেনের উপস্থিতিতে এটি জ্বলে আগুন লাগতে পারে। তবে মিথানলের শিখা প্রায় অদৃশ্য থাকে, যা একে বিপজ্জনক করে তোলে, কারণ আগুন সহজে বোঝা যায় না। মিথানল অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং পানি উৎপন্ন করে, এই বিক্রিয়ায় তাপ ও আলো নির্গত হয়, যা আগুন হিসেবে দৃশ্যমান হয়।
তিনি আরও বলেন, হাইড্রোজেন সালফাইড নিজে আগুন লাগায় না, তবে এটি দাহ্য এবং বিস্ফোরক হতে পারে। হাইড্রোজেন সালফাইড একটি বর্ণহীন গ্যাস যা বাতাসের চেয়ে ভারী এবং পচা ডিমের মতো গন্ধযুক্ত। এটি দাহ্য এবং অক্সিজেনের সঙ্গে মিশে বিস্ফোরক হতে পারে। অ্যাসিটিক অ্যাসিড নিজে থেকে আগুন ধরে না। এটি একটি দাহ্য পদার্থও নয়। তবে, অ্যাসিটিক অ্যাসিড দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে এলে বা উচ্চ তাপমাত্রায় কিছু রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটাতে পারে, যা থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
আগুন ও অগ্নিনির্বাপন সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, যেকোনো আগুনের চেয়ে কেমিক্যালের আগুন অত্যন্ত জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকি থেকে বাঁচতে হলে এখানে দরকার সঠিক ইনফরমেশন। এখানে কি ধরনের কেমিক্যাল ছিল, সেটা শনাক্ত করে নির্বাপনের জন্য কি অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জাম ব্যবহার করবো সেটা নির্ধারণ করতে পারবো। এজন্য সঠিক ইনফরমেশন দরকার। কিন্তু আমাদের ওই মামুন প্লাজার ভবন বা গোডাউন মালিকপক্ষ সে ইনফরমেশনটা দেয়নি।
তিনি বলেন, আগুন লাগার খবরে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর কাজ শুরু করলেও কিন্তু সেটা যে কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন তা জানতাম না। আমাদের জানানো হয়নি। কেমিক্যাল জানার পর আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা আর প্রফেশনালিজম দিয়ে দোকানের কাছে গিয়ে কাজ শুরু করি।
সালেহ উদ্দিন বলেন, প্রথমে আমরা ফোম ব্যবহার করেছি। ফোম দেওয়া আবার বন্ধ করে দেখেছি কী হয়। তারপর আস্তে আস্তে আবারো অগ্নিনির্বাপণ প্রক্রিয়া চালিয়ে আগুনের তীব্রতা ও ধোঁয়া কমিয়ে এনেছি।
আবাসিক কাম বাণিজ্যিক ভবনে কেমিক্যাল বিক্রির দোকান বা গোডাউন রাখাসহ কেমিক্যাল মজুদ বা বিক্রি সম্পূর্ণ অবৈধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে ভবনটি আবাসিক কাম বাণিজ্যিক। এরকম ভবনের কেমিক্যালের ব্যবসা যারা করেন তাদের বোঝা উচিত যে কী ধরনের কেমিক্যালের ব্যবসা তারা করবেন, রাখতে পারবেন।
আমরা এখানে অগ্নিনির্বাপনের পর যে ধরনের কেমিক্যালের আলামত পেয়েছি তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, এক্সপ্লোসিভ, বিস্ফোরণ হতে পারতো। আবাসিক এলাকায় আবাসিক কাম বাণিজ্যিক ভবনে যারা থাকেন তাদের এটা অনুধাবন করা উচিত। তাদের খেয়াল করা উচিত এখানকার ব্যবসায়ীরা কী ধরনের কেমিক্যালের ব্যবসা করছেন।
সালেহ উদ্দিন বলেন, যদি আমরা ভবন মালিককে পেতাম তাহলে এখানকার আগুন নেভানো সহজ হতো। ভোর ৫টায় লাগা আগুন আমরা সকাল ৭টার সময় নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি।

কোনো দোকান-গোডাউনে নেই এমএসডিএস
তিনি বলেন, কেমিক্যালের ব্যবসা করতে হলে দোকানে এমএসডিএস (ম্যাটারিয়াল সেফটি ডাটা শিট) থাকতে হবে। যেটা দেখে আমরা নিশ্চিত হবো যে এখানে অগ্নিকাণ্ডের স্থানে এই কেমিক্যাল আছে। কোনো কেমিক্যালের এটি বিবেচনায় আমরা অগ্নিনির্বাপন কৌশল নির্ধারণ করতে পারতাম। আমরা এখানে এমএসডিএসের কোনো চিহ্ন পাইনি। যারা কেমিক্যালের ব্যবসা করেন তারা জানেন যে তাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে এমএসডিএস বাধ্যতামূলক।
আবারও আবাসিক কাম বাণিজ্যিক ভবন পরিদর্শনে নামবে ফায়ার সার্ভিস
ঝুঁকি কমাতে এই ধরনের কেমিক্যাল ব্যবসা যারা করেন তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো আবারো পরিদর্শন করবে ফায়ার সার্ভিস। এসম্পর্কে সালেহ উদ্দিন বলেন, আমরা এরআগেও এই পরিদর্শন কাজ করেছি। পুনরায় এই কার্যক্রম পরিচালনা করবো, নোটিশ করবো। সব ব্যবসায়ীকে আমরা সতর্ক করবো যাতে করে মানুষের কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হয়।
বিস্ফোরণ ঘটলে চিত্র ভয়াবহ হতো
ভবনের ওপরে ৯ ফ্লোর মিলে ৫২ আবাসিক বাসা/ফ্ল্যাট। যেখানে কয়েকশ মানুষ বসবাস করছিলেন। কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন ও আগুনের সঙ্গে কেমিক্যালযুক্ত দুর্গন্ধ টের পাওয়ার পরই আমরা আবাসিক বাসিন্দাদের সেফলি নামিয়ে এনেছি। এই আগুনে যে কোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারবো। আল্লাহর অশেষ রহম যে সেরকম কিছু ঘটেনি।
বাণিজ্যিক অংশের প্রায় সব দোকানই কেমিক্যালের
বাণিজ্যিক অংশের অধিকাংশ দোকান ও গোডাউন মূলত কেমিক্যালের। শুধু ওই ভবনই নয়, আশপাশের ভবনগুলোরও একই অবস্থা। সেফটিনেস নেই। নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি যেমন নেই তেমনি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই বছরের পর বছর চলছে এসব অবৈধ কেমিক্যাল গোডাউন।
একাধিকবার নোটিশ করা হলেও সরানো হয়নি কেমিক্যাল গোডাউন
ভবনটির আবাসিক ফ্লোরগুলোর তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করা মো. হানিফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভবন মালিক ফ্ল্যাট বিক্রি করেছেন। একেক ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্টের একেকজন মালিক। বাণিজ্যিক অংশটি পরিচালনা করেন ভবনের মূল মালিক ও এবি হাউজিং লি. এর আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি চট্টগ্রামে থাকেন। তার অবর্তমানে বাণিজ্যিক অংশটা তার ভাই চালান ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল নোমান। আমরা একাধিকবার ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট মালিকদের পক্ষ থেকে নোটিশ করেছি যে এখানে বাণিজ্যিক অংশে কোনো ধরনের দাহ্য পদার্থ, কেমিক্যাল বিক্রি বা মজুদ রাখা যাবে না। তারা আমাদের বলতেন এখানে সেসব নেই। কিন্তু আজকে আগুনের পর তো সব স্পষ্ট।
হানিফ বলেন, আমি থানায় আছি। সাধারণ ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট মালিকসহ বাসিন্দাদের সুরক্ষার চিন্তায় আমরা আইনগত ব্যবস্থার জন্য দৌড়াচ্ছি।
যোগাযোগ ও সাক্ষাৎ করার চেষ্টা স্বত্ত্বেও মামুন প্লাজার বাণিজ্যিক অংশের ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল নোমানের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
জেইউ/এসএম
