বন্ধ হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সি, দুর্ভোগে যাত্রীরা

বেতন–ভাতা বাড়ানোর দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেছেন হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সি পরিচালনায় যুক্ত কর্মীরা। এতে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন নিয়মিত যাত্রীরা। গত সোমবার থেকে তারা এ দাবি আদায়ে কাজে যোগ না দেওয়ায়, চার দিন ধরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এ নৌ পথ বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) হাতিরঝিলের গুলশান (গুদারাঘাট), রামপুরা ঘাট, পুলিশ প্লাজা ঘাট ও এফডিসি ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, সব জেটি ও কাউন্টার বন্ধ। যাত্রীরা আসলেও ট্যাক্সি না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
দেড় মাস আগে করিম গ্রুপ ইজারার ভাড়া বকেয়া রাখায় রাজউক ওয়াটার ট্যাক্সি চলাচল বন্ধ করেছিল। তখনও পাঁচ দিন বন্ধ ছিল সেবা। ভাড়া পরিশোধের পর আবার চালু হয়।

হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সি কাউন্টারে কাজ করা একজন কর্মী সাজেদুর রহমান। ওয়াটার ট্যাক্সি বন্ধ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা যারা এখানে কাজ করি তারা তাদের বেতন বাড়ানোর দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছি। আমরা প্রায় ৬০ জনের মত কর্মী হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। আমরা সবাই চাই আমাদের বেতন বাড়ানো হোক। কোম্পানির কাছে আমরা এই দাবি জানাচ্ছি। আমাদের দাবি মানা হলে তবেই আমরা কাজে ফিরবো।
ওয়াটার ট্যাক্সির পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান করিম গ্রুপের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সোমবার থেকে কর্মীরা ওয়াটার ট্যাক্সি চালানো বন্ধ রেখেছে। আমাদের কোম্পানির পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
জানা গেছে, হাতিরঝিলে বর্তমানে ১৫টি ওয়াটার ট্যাক্সি চলাচল করে। প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার যাত্রী এই সেবার ওপর নির্ভরশীল। সেবা বন্ধ থাকায় তাদের দুর্ভোগ বেড়েছে।

রাজধানীর গুলশান ঘাটে কথা হয় ওয়াটার ট্যাক্সির যাত্রী খাদেমুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার বাসা বাড্ডা আর অফিস কারওয়ানবাজার। প্রতিদিন ওয়াটার ট্যাক্সিতে যাতায়াত করি। কিন্তু আজ চারদিন ধরে এসব ওয়াটার ট্যাক্সি বন্ধ। শুনেছি তাদের বেতন নিয়ে ঝামেলার কারণে এই সেবা বন্ধ আছে। কিন্তু ভোগান্তিতে পড়েছি আমরা সাধারণ যাত্রীরা। এখন যানজট ঠেলে প্রতিদিন দীর্ঘসময় নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। প্রতিদিন চলাচল করা সাধারণ যাত্রীদের কথা ভেবে হলেও সংশ্লিষ্টদের ওয়াটার ট্যাক্সি চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

রাজধানীর রামপুরা ঘাটে ওয়াটার ট্যাক্সিতে পারাপারের জন্য এসে তা বন্ধ থাকায় ফিরে যাচ্ছিলেন মোর্শেদ আহমেদ নামের আরেক যাত্রী। তিনি বলেন, এফডিসি ঘাটে যাওয়ার জন্য এই রামপুরা ঘাটে এসেছিলাম, কিন্তু এসে দেখি এটা চলাচল বন্ধ আছে। আমি আগে থেকে বিষয়টি জানতাম না ফলে ফিরে যেতে হচ্ছে। আমার মতো এমন অসংখ্য যাত্রী প্রতিনিয়ত ঘাটগুলোতে এসে ওয়াটার ট্যাক্সি চলাচল না করায় ঘুরে যেতে হচ্ছে। এতে করে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
এএসএস/এআইএস