বায়েজিদ লিংক রোড আবার খুলে দেওয়া হচ্ছে

পাহাড় ধসের শঙ্কায় বন্ধ হওয়া চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থেকে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট পর্যন্ত লিংক রোডে মঙ্গলবার (১৫ জুন) থেকে আবার যান চলাচল শুরু হচ্ছে।
সোমবার (১৪ জুন) বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস। তিনি বলেন, সড়কটি বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন অংশে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে পুলিশ প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন সড়কটি খুলে দিতে বলেছে। তাই সড়কটি আবারও খুলে দেওয়া হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার (৮ জুন) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে এ সড়ক দিয়ে যানবাহন ও পথচারী চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছিল চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এইসময় সিডিএ বলছিল সড়কটি তিন মাস বন্ধ থাকবে। পাহাড় ধসের শঙ্কা ও উন্নয়ন কাজের কথা বলে তিন মাস সড়কটি বন্ধের কথা জানিয়েছিল সিডিএ।

প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, সড়কটির উভয়মুখী লেন মঙ্গলবার সকাল থেকে খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু যেখানে পাহাড় ঝুঁকিপূর্ণ আছে সেখানে শুধু রাস্তার একপাশ খুলে দেওয়া হবে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ অংশের সড়ক ও ফুটপাতে ব্যারিকেড দেওয়া হবে, যাতে মানুষ ও যানবাহন প্রবেশ করতে না পারে।
তিনি আরও বলেন, রাস্তাটি খোলা রেখেই বাকি কাজ শেষ করতে হবে। পরিবেশ অধিদফতর থেকে অনুমতি পেলে পাহাড়ের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু করা হবে। পরিবেশ অধিদফতরের মামলার জন্য পাহাড় রিটেনশনের কাজ দেরি হচ্ছে। অনুমতি পেলেই রিটেনশনের কাজ শুরু হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর যানজট সমস্যা সমাধানের জন্য বায়েজিদ বোস্তামি থেকে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করছে সিডিএ। সড়কটি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করা হয়নি। সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে সড়কটিতে গাড়ি চলাচলের জন্য আনঅফিসিয়াল অনুমতি দেওয়া হয়েছিল গত বছরের সেপ্টেম্বরে।

চার লেনবিশিষ্ট সড়কটি নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২০ কোটি টাকা। একাধিকবার প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২০১৯ সালের জুনে শেষ করার কথা ছিল। পরবর্তীতে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত আবার কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়। তবে এই সময়ের মধ্যেও কাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে।
বায়েজিদ বোস্তামি থেকে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়কে ছোট বড় ১৮টি পাহাড় রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ-ছয়টি পাহাড় ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিদিনই সড়কটি দিয়ে প্রচুর যানবাহন চলাচল করে। এছাড়া সড়কটি দেখতে প্রচুর মানুষ সেখানে যায়।
পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, সড়কটি নির্মাণের জন্য অধিদফতর থেকে আড়াই লাখ ঘনফুট পাহাড় কাটার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে ১০ লাখ ৩০ হাজার ঘনফুট পাহাড় কাটা হয়। এ জন্য সিডিএকে ১০ কোটি টাকার জরিমানা করা হয়।
ঝুঁকিপূর্ণ খাড়া পাহাড়গুলো নতুন করে কেটে সুরক্ষার জন্য গত বছরের ২৩ মার্চ পরিবেশ অধিদফতরে পুনরায় আবেদন করে সিডিএ। ওই আবেদনে নতুন করে ৩ লাখ ৩২ হাজার ঘনমিটার পাহাড় কাটার অনুমতি চায় সংস্থাটি। এরপর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলো কাটা ও সংরক্ষণ কীভাবে করা হবে, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামতসহ প্রতিবেদন চায় পরিবেশ অধিদফতর।
কেএম/ওএফ