অপ্রতুল বিনিয়োগের কারণে চিকিৎসা সেবার মান কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছায়নি

বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, স্বাস্থ্যখাতে দুই দশক ধরে বাজেটের বরাদ্দ মোট জিডিপির ১ শতাংশেরও কম—বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ করা ৫ শতাংশ থেকে অনেক দূরে। এই অপ্রতুল বিনিয়োগের কারণে চিকিৎসা সেবার মান কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছায়নি।
সোমবার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিসি) আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠন’ শীর্ষক এক সংলাপে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও শিক্ষা- সংক্রান্ত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জানান, ৭৭টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে ছয়টিতে এনাটমির অধ্যাপক নেই, ১৬টিতে ফিজিওলজির, ১৭টিতে বায়োকেমিস্ট্রির ও ১৮টিতে ফরেনসিক মেডিসিনের অধ্যাপক নেই। শিক্ষকদের চরম ঘাটতির কারণে প্রতি ১০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক রাখার বাধ্যতামূলক শর্ত মানা হচ্ছে না। ফলে মেডিকেল শিক্ষার মান অবনতির দিকে। একজন দক্ষ চিকিৎসক তৈরির জন্য ভালো শিক্ষক ও ভালো শিক্ষার মান নিশ্চিত করা আবশ্যক।
তিনি আরও বলেন, মেডিকেল এক্রেডিটেশন নিশ্চিত না হলে দেশে অর্জিত ডাক্তারি ডিগ্রি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাবে না। এসব সমস্যার জট খুলতে না পারলে স্বাস্থ্যখাতে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়।
চিকিৎসকদের নিয়ে সম্প্রতি সরকারের শীর্ষ একজন উপদেষ্টার অবমাননাকর মন্তব্য নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, এই ধরনের বক্তব্য কি মানুষকে পার্শ্ববর্তী দেশে চিকিৎসা নিতে উৎসাহিত করে না? আমরা এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পরে সামাজিক মাধ্যমে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বলে জানান তিনি।
ডা. রফিক বলেন, দেশে সরকারি চিকিৎসকের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৪৮,৯০০ জন, আর নার্সের সংখ্যা আরও কম—৪১,১৪৬ জন। অনুপাত অনুযায়ী প্রতি হাজার জনে চিকিৎসক মাত্র ০.৭ জন। তাই রোগীর অতিরিক্ত চাপের কারণে অনেকে যথাযথ চিকিৎসাসেবা পান না। এসব সমস্যার সমাধানে বিএনপির প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য সংস্কার পরিকল্পনায় করণীয় উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ডা. রফিকুল ইসলামের মতে, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। টেকসই গণতন্ত্র থাকলে স্বাস্থ্যখাতসহ প্রতিটি খাতে কাঙ্ক্ষিতভাবে সংস্কার করা সম্ভব। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা হলে সেটি অশনিসংকেত বহন করবে বলে তিনি সতর্ক করেন।
এএইচআর/জেডএস