‘গত তিনটি নির্বাচনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা ছিল না, কিন্তু আমরা সবাই দায়ী’

গত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের মূল ভূমিকা ছিল না। কিন্তু সব অনিয়মের দায় চাপানো হয়েছে আমাদের ওপর। এজন্য আগামী নির্বাচনগুলোতে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে চান বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার/সমমান কর্মকর্তা কল্যাণ পরিষদের নেতারা।
শনিবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে উপজেলা নির্বাচন/সমমান কর্মকর্তা কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আগামী সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার পদে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার পদকে ষষ্ঠ গ্রেডে এবং সহকারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে ৯ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি জানিয়েছেন উপজেলা/থানা বা সমমান অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন।
সভায় সংগঠনের নেতাদের অভিযোগ, অতীতের নির্বাচনে কমিশনের কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি, কিন্তু তারপরও সব অনিয়মের দায় এসে পড়েছে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ওপরে। তাদের অভিযোগ ১৫ /২০ বছর একই পদে কর্মরত অথচ অন্যান্য ক্যাডারে কয়েক ধাপ পদোন্নতি পেয়ে ভোটের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে। ওইসব দায়িত্বে থেকে ভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অনিয়মের সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু দায় এসেছে কমিশন কর্মকর্তাদের ওপর। এ অবস্থার অবসানে ইলেকটোরাল সার্ভিস গঠনের দাবি করেন কর্মকর্তারা।
সংগঠনের আহ্বায়ক আশফাকুর রহমান বলেন, গত তিনটি নির্বাচনে কমিশনের কর্মকর্তাদের মূল ভূমিকা ছিল না। কিন্তু ওই তিন নির্বাচনের জন্য সবাই আমাদের দায়ী করে। এজন্য কমিশনের কর্মকর্তারা তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে চাই। কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সব দায়িত্ব পালন করতে পারবো। বিশেষ করে সুষ্ঠু ও কার্যকর নির্বাচন ব্যবস্থা আনতে হবে। বিগত সময়ে আমরা আমাদের কাজ করতে পারিনি। আমাদের দেখিয়ে সবাই সুবিধা নিয়েছে। ইসি এসব দাবির প্রতি সম্মান জানাবে প্রত্যাশা করি।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন একই পদে আছে। এজন্য নির্বাচন সার্ভিস গঠন করতে হবে। পাশাপাশি গ্রেড আপগ্রেডেশন করতে হবে এবং সহকারী নির্বাচন অফিসারদের ৯ম গ্রেড করার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া উপজেলা নির্বাচন অফিসারদের ডাবল কেবিন পিকআপ দিতে হবে এবং সহকারী নির্বাচন অফিসারদের একটা মোটরসাইকেলের ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে জনবল নিয়োগ দিয়ে এনআইডি'র কালো আইন বাতিল করতে হবে।
সংগঠনের সদস্য সচিব মো. ইউসুফ-উর-রহমান বলেন, জাতিকে একটা সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে চাই। ভালো নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কর্মকর্তাদের সার্ভিস কমিশন গঠন, পদ আপগ্রেডেশন প্রয়োজন।
যেসব প্রস্তাব করেছে, উপজেলা/থানা/সমমান ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন
১. নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে দ্রুততম সময়ে "নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫" জারি করে 'নির্বাচন কমিশন সার্ভিস' গঠন;
২. উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার পদ ৬ষ্ঠ গ্রেডে এবং সহকারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার পদ ৯ম গ্রেডে উন্নীতকরণ;
৩. ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের স্বার্থে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের জন্য ডাবল-কেবিন পিকআপ এবং সহকারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের জন্য মোটরসাইকেল বরাদ্দকরণ;
৪. জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন ২০২৩ বাতিল করে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম পুনরায় নির্বাচন কমিশনের কাছে ন্যস্তকরণ।
এসআর/এআইএস