মূল ভবন পরিত্যক্ত, অফিসেও চলছে ক্লাস

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার পাইন্দং ইউনিয়নের সীমান্তঘেঁষা কাঞ্চননগর ডলু রাবারবাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মারাত্মক ভবন সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। এ অবস্থায় শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান কার্যক্রম চালাতে প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে। সেই বিদ্যালয়ের পুরোনো ভবন এখন সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী। ছাদের পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। ২০২৩ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ঘোষণা করে। পরে পাশের একটি অস্থায়ী টিনশেড ভবন তৈরি করা হয়। এতে করে সীমিত জায়গায় ক্লাস সংকট দেখা দেয়। ফলে অফিস কক্ষেও ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়টি চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের পাশ ঘেঁষা হলেও নেই সীমানা প্রাচীর। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকায় শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের মাঠে খেলাধুলার সুযোগ দিচ্ছেন না। এ ছাড়া অস্বাস্থ্যকর শৌচাগারের কারণে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেও রয়েছে।
আরও পড়ুন

বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়াম আক্তার জানায়, ক্লাস করার জন্য ঠিকমতো ঘর নেই। অফিসের মধ্যে গাদাগাদি করে পড়তে হয়। বাথরুমও খুব নোংরা।
চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র নাঈম হোসেন বলে, মাঠে খেলতে গেলে স্যাররা বারণ করেন। গাড়ি চলাচল করে বলে আমরা ভয় পাই।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টির উন্নয়ন হয়নি। দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ ও অবকাঠামো সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকসহ এলাকাবাসী।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি রসুল আমিন বলেন, আমাদের সন্তানরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। আমরা চাই দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করা হোক।
জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জুবেদা খানম বলেন, ভবনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে প্রতিদিন আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস নিতে হয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য এটি নিরাপদ নয়। কক্ষ সংকটে একটি কক্ষেই শ্রেণি ও দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। একটি ভবন পেলে এই দুঃখ লাঘব হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হাছান মুরাদ চৌধুরী বলেন, বিদ্যালয়ের বিষয়টি আমাদের জানা আছে। আমরা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরি ভিত্তিতে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠাব।
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বিদ্যালয়টির ভবন ভগ্নদশায় রয়েছে বলে আমরা অবগত। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হবে।
এমআর/এসএসএইচ