সমাজ, স্বাস্থ্য-পরিবেশ সুরক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান

‘বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস ২০২৫’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত মানববন্ধনে সমাজ, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ সুরক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা।
তারা বলেন, ঢাকার সড়কে প্রতিদিন প্রায় ৪০ লাখের বেশি যানবাহন চলাচল করে। এর মধ্যে মাত্র ৫ থেকে ৭ শতাংশ ব্যক্তিগত গাড়ি হলেও তারা প্রায় ৭০ শতাংশ সড়ক জায়গা দখল করে। গণপরিবহনে নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা প্রায় ৯০%। বুয়েটের গবেষণা অনুযায়ী, ঢাকার যানজটের কারণে বছরে প্রায় ৩ থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ নষ্ট হয়।
মাত্রাতিরিক্ত যান্ত্রিক যানের কারণে বাড়ছে বায়ুদূষণ, ফলে ঢাকায় প্রতিবছর প্রায় ৮০ হাজার মানুষের অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি হয়। সমাজ, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ সুরক্ষায় ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে হাঁটা, সাইকেল ও গণপরিবহন ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিয়ে একটি সমন্বিত পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছে তারা।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) উদ্যোগে সরকারি এবং বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সহ-আয়োজনে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে আয়োজিত ‘সমাজ, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ সুরক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান’ শীর্ষক মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) এডিশনাল ডিআইজি ও ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট অফিসার সেলিম খান বলেন, ব্যক্তিগত গাড়ির হর্নের কারণে ঢাকা শহরের মানুষের শ্রবণশক্তি ৫-১০% কমে যাচ্ছে। যদি ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কঠোর নিয়ন্ত্রণে আনা হয়, পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ডিটিসিএ-এর ডেপুটি ট্রান্সপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার কে এম তৌফিকুল হাসান বলেন, শহরের অভ্যন্তরে যেসব রাস্তায় ফুটপাত রয়েছে সেখানে চলাচলের ক্ষেত্রেও প্রতিনিয়ত আমাদেরকে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তাই ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত এবং কঠোর মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা জরুরি। ডিটিসিএ ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কার্যক্রমের পরিকল্পনা করছে।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, ২০০৬ সাল থেকে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট ৬৯টি সরকারি-বেসরকারি সংগঠনের সমন্বয়ে প্রতিবছর গাড়িমুক্ত দিবস পালন করে আসছে। মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রবেশযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক মাঠ, পার্ক, উন্মুক্ত স্থানের কোনো বিকল্প নেই। উন্মুক্ত স্থানের স্বল্পতার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতি মাসের প্রথম শুক্রবারে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর রাস্তাটি সব মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে আমরা আর সেটি দেখতে পাই না।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের প্রজেক্ট অফিসার প্রমা সাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন– নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা হাফিজুর রহমান ময়না, ঢাকা আহসানিয়া মিশনের পরিচালক (হেল্থ সেক্টর) ইকবাল মাসুদ, গ্রিন ভয়েজের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির সুমন, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ প্রমুখ।
এএসএস/বিআরইউ