হাতকড়া পরিহিত ছবি ব্যবহারে বিভ্রান্তিকর-অসত্য তথ্য প্রচার হচ্ছে

সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের দুটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তিনি হাতকড়া পরা অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রয়েছেন।
কেউ বলছেন, মুমূর্ষু অবস্থায়ও নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনকে হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়েছে। কেউ বলছেন, মৃত্যুর পরও তার হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। ঘটনাটিকে অমানবিক বলেও উল্লেখ করছেন অনেকে।
তবে বাংলাদেশ কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের হাতকড়া পরিহিত ছবি ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।
কারা কর্তৃপক্ষের দাবি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ছবিটি কোনোভাবেই তার আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থার নয়। গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার মধ্যেই মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে কারা অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (গণমাধ্যম ও উন্নয়ন) জান্নাত-উল-ফরহাদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের একটি ছবি ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ জেল কর্তৃপক্ষ স্পষ্টভাবে জানাচ্ছে যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ছবিটি কোনোভাবেই তার আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থার নয়।
অতএব, সকলের প্রতি অনুরোধ– দায়িত্বশীল নাগরিক/মাধ্যম হিসেবে মৃত একজন ব্যক্তিকে নিয়ে এ ধরনের বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার থেকে বিরত থাকুন।
প্রাসঙ্গিকভাবে উল্লেখ্য যে, অসুস্থতার কারণে কারাবন্দি অবস্থায় সাবেক এই মন্ত্রীকে একাধিকবার যথাযথ নিয়মে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। পরে গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন।
বাংলাদেশ জেল কর্তৃপক্ষ পুনরায় আপনাদের নিশ্চিত করছে যে, সব বন্দির মানবিক মর্যাদা রক্ষায় আমরা সর্বদা দায়িত্বশীল এবং এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, আক্রমণ ও হত্যার অভিযোগে একই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনকে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর কারাগার আর আদালতে যাওয়া-আসা করতে হয়েছে সাবেক এ মন্ত্রীকে। অসুস্থতাজনিত কারণে একাধিকবার তাকে হাসপাতালেও নিতে হয়েছে। সেসময় তাকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল।
তার নামে ঢাকায় চারটি হত্যা মামলা ও নরসিংদীতে একটি হত্যা মামলা রয়েছে। তিনি কেরাণীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
পুলিশ প্রবিধানের ৩৩০ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বা তদন্ত স্থলে পাঠানোর জন্য পুলিশ বন্দিকে পালানো রোধে যা প্রয়োজন, তার চেয়ে বেশি কড়াকড়ি উচিত নয়। হাতকড়া বা দড়ির ব্যবহার প্রায় ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় ও অমর্যাদাকর।
এতে আরও বলা হয়েছে, বয়স বা দুর্বলতার কারণে যাদের নিরাপত্তা রক্ষা করা সহজ ও নিরাপদ, তাদের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করা উচিত হবে না।
জেইউ/এসএসএইচ