ইউপি ভোট : ইভিএম নিয়ে ইসির বিশেষ পরিপত্র

আগামী ২১ জুন প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিতব্য স্থগিত ১০টি জেলার ২০টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে ইভিএম বিষয়ে বিশেষ পরিপত্র জারি করেছে ইসি। কমিশনের পরিচালনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমানের স্বাক্ষরিত পরিপত্রটি ১৭ জুন জারি করা হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ইউপি নির্বাচনে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) কর্মকর্তারা সরেজমিন উপস্থিত থেকে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের সব প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা দেবেন। এছাড়া ভোটগ্রহণ প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইভিএম কাস্টমাইজেশনসহ নির্বাচন উপযোগী করে যথাসময়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
পরিপত্রের বিষয়সমূহ
ইভিএম ব্যবহার পদ্ধতি সম্পর্কে প্রার্থী এবং ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক প্রচার : ইভিএম ব্যবহার যেহেতু একটি কারিগরি বিষয় এবং নতুন ধরনের ব্যবহার কার্যকারিতা রয়েছে, এজন্য সব প্রার্থী, নির্বাচনী এজেন্ট, পোলিং এজেন্ট এবং ভোটারদের মধ্যে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের সুবিধার্থে ইভিএম ব্যবহার পদ্ধতি বিষয়ক একটি নির্দেশিকার প্রয়োজনীয় সংখ্যক ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ : নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা অর্থাৎ প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের জন্য দুই দিনব্যাপী এবং পোলিং অফিসারদের জন্য ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহারের বিষয়ে এক দিনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মক ভোটিং : নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়ে সব সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার উপস্থিত থেকে নির্বাচন সম্পন্ন করবেন। মক ভোটিং শেষে সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসার গণভোটে এ ব্যবহৃত ইভিএমগুলো সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে বুঝিয়ে দেবেন। অফিসাররা ভোটগ্রহণের দিন ভোটগ্রহণের জন্য ব্যবহৃত ইভিএম এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক অফিসারের নির্দেশনা অনুসারে প্রতিস্থাপন করতে হবে।
নিরাপত্তা সহকারে ইভিএম এর পরিবহন, সংরক্ষণ ও কার্যকারিতা যাচাই করা : ইভিএমগুলো ইলেকট্রনিক ডিভাইস বিধায় মেশিনসমূহ সারিবদ্ধভাবে রেখে যথাযথ নিরাপত্তার সঙ্গে পরিবহন করতে হবে। ভোটগ্রহণের আগের দিন নির্বাচনী মালামাল বিভিন্ন প্রিজাইডিং অফিসারকে বুঝিয়ে দিতে হবে। প্রিজাইডিং অফিসাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারসহ অবশ্যই সঠিকতা যাচাই করবেন। কোনরকম ত্রুটি-বিচ্যুতি পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রিজাইডিং অফিসার রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন। রিটার্নিং অফিসার কন্ট্রোল রুমকে অবহিত করে ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধন অথবা প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
কারিগরি দল গঠন : প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের একজন করে কারিগরি সদস্য সহযোগিতা করবেন। এর জন্য রিটার্নিং অফিসার তাদেরকে প্রয়োজনে লজিস্টিক সাপোর্ট প্রদান করবেন। প্রিজাইডিং অফিসার ভোটগ্রহণের জন্য ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষ প্রস্তুত করবেন।
মোবাইল কারিগরি টিম : নির্বাচন কমিশন থেকে প্রেরিত সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত মোবাইল কারিগরি টিম সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে অবস্থান করবেন। ভোটগ্রহণের দিন বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ইভিএমের কারিগরি সমস্যায় আনুষঙ্গিক লজিস্টিক সহায়তা দেওয়া নিশ্চিত করবেন।
ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কার্ডের এবং প্রদত্ত পিন পাসওয়ার্ড গোপনীয়তা রক্ষা : ইভিএমের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কার্ড এবং মেশিন চালু করার পিন পাসওয়ার্ড প্রিজাইডিং অফিসারকে সরবরাহ করা হবে। যথাযথ নিরাপত্তার সঙ্গে ব্যবহার করে এবং এসবের কার্ড এবং পাসওয়ার্ড যথাযথ গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে।
অতিরিক্ত অডিট ও পোলিং কার্ডের ব্যবহার : সুষ্ঠুভাবে সিটি নির্বাচন সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে কেন্দ্রে ব্যবহৃত অডিট কার্ড ও পোলিং কার্ডের একটি সামগ্রিক ব্যাকআপ রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে সংরক্ষিত রাখবেন।
ইভিএম যাচাই করা : ভোটগ্রহণের আগের দিন অর্থাৎ ২০ জুন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নামের বিপরীতে ব্যালট ইউনিটে সঠিকভাবে প্রতীক সন্নিবেশিত আছে কি না তা ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে প্রিজাইডিং অফিসার যাচাই করবেন।
ডেমো ভোটগ্রহণ : ভোটকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য সর্বদা গৃহীত ইভিএমগুলো ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার আগে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নির্বাচনী এজেন্ট ও পোলিং এজেন্টকে ভোটগ্রহণ প্রদর্শন করতে হবে। ডেমো ভোটগ্রহণের প্রাক্কালে ইভিএমগুলো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নাম ও প্রতীক সঠিক আছে কি না তা যাচাই-বাছাই করতে হবে।
এসআর/আরএইচ