শোরুমে চাঁদাবাজি-হামলার প্রতিবাদে গাড়ির বিক্রি বন্ধের আলটিমেটাম

গাড়ির শোরুমে চাঁদাবাজি এবং দফায় দফায় হামলার প্রতিবাদে দেশের সকল শোরুম বন্ধ রেখে মানববন্ধন করেছেন গাড়ি ব্যবসায়ীরা। চাঁদাবাজির হুমকি বন্ধ এবং জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা না হলে আগামী মাস থেকে গাড়ি বিক্রি বন্ধসহ আমদানি গাড়ি ছাড় না করা, নিবন্ধন করা ও সরকারকে রাজস্ব দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গাড়ি ব্যবসায়ীরা।
রোববার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সারাদেশের শোরুম বন্ধ রেখে বারভিডা সদস্যরা রাজধানীর প্রগতি স্মরণির কোকাকোলা মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। ‘বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা)’ ব্যানারে শতাধিক রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ী অংশ নেন।
মানববন্ধন শেষে বারভিডা প্রেসিডেন্ট আবদুল হক বলেন, গত কয়েকমাস ধরে বারবার চাঁদাবাজি ও ককটেল হামলার ঘটনা ঘটছে। ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, ক্রেতারা শোরুমে আসতে ভয় পাচ্ছেন। যদি আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তবে আমরা বাধ্য হবো আমাদের আমদানিকৃত গাড়িগুলো বন্দর থেকে খালাস না করতে এবং শুল্ক-কর প্রদান কার্যক্রম স্থগিত রাখতে। একইসঙ্গে বিআরটিএতে গাড়ি রেজিস্ট্রেশনও বন্ধ রাখব।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই ব্যাবসায়িক পরিবেশ স্বাভাবিক হোক, যাতে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই নিরাপদে লেনদেন করতে পারেন।
মানববন্ধনে সংগঠনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হাবিব উল্লাহ ডন, প্রাক্তন সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, ভাইস প্রেসিডেন্ট-১ মো. সাইফুল ইসলাম (সম্রাট), ভাইস প্রেসিডেন্ট-৩ ফরিদ আহমেদ এবং কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বারভিডার জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ জগলুল হোসেন, জয়েন্ট ট্রেজারার মো. হাফিজ আল-আসাদ, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি জোবায়ের রহমান, প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেক্রেটারি এস এম মনসুরুল কবির (লিংকন), কালচারাল সেক্রেটারি মো. গোলাম রাব্বানি (শান্ত) এবং অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, সম্প্রতি তারা ডিএমপি কমিশনার ও র্যাব মহাপরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু তারপরও হামলা ও চাঁদাবাজি অব্যাহত আছে। সম্প্রতি বারিধারা ও প্রগতি সরণি এলাকায় ধারাবাহিকভাবে গত কয়েক মাসে বিসমিল্লাহ কার সেন্টার, টার্বো অটো, বেগ অটো, কার সিলেকশন, হ্যালো কার, জুম অটো, বিশ্বাস ইমপোর্টসহ মোট ১২টি বিক্রয়কেন্দ্রের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে।
ককটেল বিস্ফোরণের পর বিদেশি নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে মেসেজ দিয়ে টাকা দাবি করা হয়। আশপাশের বিক্রয়কেন্দ্রে ফোন দিয়ে বলা হয়, এরপর তাদের বিক্রয়কেন্দ্রের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ করা হবে। এমন আতঙ্কজনক পরিস্থিতির অবসান চাইছেন গাড়ি ব্যবসায়ীরা।
চার দশক ধরে দেশের পরিবহন খাতে বারভিডা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রায় ১ হাজার ৩০০ সদস্যের এই সংগঠনটির মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। এ খাতে লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। সরকারকে প্রতিবছর কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব প্রদান করে বারভিডা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তাই এ খাত রক্ষায় চাঁদাবাজি-হামলা বন্ধ চান ব্যবসায়ীরা।
এসআই/এআইএস