বিএসএমএমইউর ডিপ্লোমা জুলাই সেশনের সাক্ষাৎকারের কী হবে?

দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করেছে। এ অবস্থায় সংক্রমণের বিস্তার রোধে ও ঢাকাকে সুরক্ষিত রাখতে আশপাশের ৭ জেলায় লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। মঙ্গলবার (২২ জুন) সকাল থেকেই এসব জেলায় লকডাউন শুরু হয়েছে।
হঠাৎ এ সিদ্ধান্তের ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) জুলাই ২০২১ সেশনের এমফিল, এমএমইডি ও ডিপ্লোমা এবং এমফিল পিএসএম ও এমপিএইচ কোর্সের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছে, আগামীকাল (২৩ জুন) সাক্ষাৎকার থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। এদিকে লকডাউনের কারণে বাইরের জেলাগুলো থেকে কোনো গাড়ি ঢাকায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সব গাড়িই ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এ অবস্থায় কাল যাদের সাক্ষাৎকার রয়েছে তারা এখন কী করবেন? এ নিয়ে চরম দ্বিধায় রয়েছেন তারা।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ২০০৬-০৭ সেশনের শিক্ষার্থী ও এমফিল জুলাই-২০২১ সেশনের সাক্ষাৎকারপ্রার্থী ডা. মো. আসিফুল আমিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিএসএমএমইউতে ডিপ্লোমা জুলাই সেশনের শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকারের একটা শিডিউল আগে থেকেই দেওয়া আছে। এই অনুযায়ী আগামীকাল অনেকের সাক্ষাৎকারের পূর্বনির্ধারিত তারিখ। এদিকে, ঢাকার পার্শ্ববর্তী সাতটি জেলায় লকডাউনের কারণে কোনো বাস বা যানবাহনে ঢুকতে পারছে না। সেগুলোকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা কীভাবে ঢাকায় আসবে আর কীভাবে সাক্ষাৎকারে অংশ নেবে? কিন্তু এখন পর্যন্ত বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষা ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার জন্য একটা সাক্ষাৎকারের আয়োজন করা হয়েছে। এখানে বিএমডিসি, ইন্টার্নশিপ, এসএসসি-এইচএসসিসহ সব ধরনের সার্টিফিকেট -যেগুলো আমরা ভর্তি পরীক্ষার সময় জমা দেই, সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়। সাক্ষাৎকারে সব কাগজপত্র দেখার পর আপনি যদি ভর্তির যোগ্য হন, তাহলে এই কাগজপত্রগুলো শিক্ষার্থীরা যেসব প্রতিষ্ঠানে চান্স পেয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের চলে যাবে এবং সেখানে গিয়ে সে ভর্তি হতে পারবে। এটাও বলা যায় পরীক্ষার একটা অংশ।
রংপুর মেডিকেল কলেজের ২০০৮-০৯ সেশনের সাবেক শিক্ষার্থী ও ঢাকা মেডিকেল কলেজে ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ডা. রেনেসাঁ ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে যেহেতু ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোয় লকডাউন দেওয়া হয়েছে, সেক্ষেত্রে সাক্ষাৎকারটাও আপাতত স্থগিত রাখা উচিত। অথবা এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সুস্পষ্ট বক্তব্য দেওয়া উচিত। কারণ লকডাউনের কারণে বাস-ট্রেন এমনকি লঞ্চেও ঢাকায় প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই, ফলে এটি নিয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এই বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, যেহেতু ঢাকার পার্শ্ববর্তী সাত জেলায় লকডাউন দেওয়া হয়েছে, সেহেতু শিক্ষার্থীদের আসতে কিছুটা সমস্যা হবে, এটাই স্বাভাবিক। আমরা নির্ধারিত সেই তারিখটি পরিবর্তন করে দেব। এটা নিয়ে আমরা আলোচনা করে দ্রুতই নতুন তারিখ জানিয়ে দেব। আশা করি এটি নিয়ে কোনো ধরনের জটিলতা তৈরি হবে না।
উল্লেখ্য, করোনার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলাই ২০২১ সেশনের এমফিল, এমএমইডি ও ডিপ্লোমা এবং এমফিল পিএসএম ও এমপিএইচ কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা কয়েকবার পিছিয়েছে। অবশেষে ৪ জুন ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং সেদিনই সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ ফল প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিএসএমএমইউয়ের তথ্য মতে, এ বছর মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৭ হাজার ১৫০ জন। এর মধ্যে মেডিসিন অনুষদে ১ হাজার ৫২৯ জন, সার্জারি অনুষদে ৩ হাজার ২৯৯ জন, বেসিক সায়েন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদে ৭৫৪ জন, ডেন্টাল অনুষদে ২০৯ জন, প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন অনুষদে ৬১৬ জন এবং শিশু অনুষদে ৭৪৩ জন পরীক্ষার্থী পাস করেন।
টিআই/এসকেডি