মোহাম্মদপুরে যুবককে তুলে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ

রাজধানীর মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত তথ্য সেনাবাহিনীকে দেওয়ার অভিযোগে শামশাদ নামে এক যুবককে তুলে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মাদক কারবারি চক্রের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ব্যক্তি ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মী।
গতকাল শনিবার বিকেল ৩টার দিকে মোহাম্মদপুরের আজিজ মহল্লা এলাকা থেকে একদল লোক তাকে তুলে নেয়। রোববার বিষয়টি জানান তার বড় ভাই মেরাজ।
তিনি বলেন, শামশাদকে জেনেভা ক্যাম্পের সি ব্লকের একটি কক্ষে নিয়ে ধারালো অস্ত্রের উল্টো দিক দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে মুন্না, আজম, তানভীর, ইস্তিয়াক, পলাশ ও সুমন মিলে পিটিয়েছে।
তিনি আরও জানান, শামশাদের অবস্থান জানতে পেরে মেরাজ পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ক্যাম্পে যান। তবে, পুলিশ যাওয়ার আগাম খবর পেয়ে অভিযুক্তরা স্থান পরিবর্তন করে। পরে তিনি কাছাকাছি সেনা ক্যাম্পের সহায়তা চান। বিকেল ৫টার দিকে জেনেভা ক্যাম্পের বাইরে রক্তাক্ত অবস্থায় শামশাদকে পাওয়া যায়।
ভুক্তভোগী ভাইয়ের বরাতে মেরাজ জানান, একপর্যায়ে শামশাদ নির্যাতনের কক্ষ থেকে পালাতে সক্ষম হন এবং পরে ক্যাম্পের ভেতরে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। স্থানীয়দের সহায়তায় তিনি বোরকা পরে এলাকা ত্যাগ করেন।
মেরাজ জানান, শীর্ষ মাদক কারবারীর গতকাল আমার ভাইকে সেনাবাহিনীর সোর্স সন্দেহে পাইওনিয়ার হাউস থেকে তুলে নিয়ে যায়। তাদের ধারণা সেনাবাহিনী অভিযান করলে তার ভাই বুনিয়া সোহেলের লোকজনকে ধরিয়ে দেয়।
ভুক্তভোগীর একাধিক ছবিতে দেখা যায়, তার শরীরজুড়ে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নীল ফোলা ও অসংখ্য দাগ রয়েছে।
জেনেভা ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, শামশাদকে তুলে নেওয়া ব্যক্তিরা শান্তি গ্রুপ নামে পরিচিত। এই গ্রুপটির নেতৃত্ব দেন বোমা কারিগর মুন্না ওরফে পোকলা মুন্না। তিনি বিভিন্ন মাদক কারবারি চক্রের হয়ে স্পট নিয়ন্ত্রণ ও মারামারি করে থাকেন। তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরকসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে।
মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মফিজ উদ্দিন বলেন, শামশাদকে নির্যাতনের ঘটনায় আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ইতোমধ্যে যা মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কাজ করছি।
এসএএ/এমজে