সড়ক অবরোধ করে অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, যানজট

ব্যাটারিচালিত রিকশা-ইজিবাইক বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন চালকরা। এতে নতুন বাজার থেকে কুড়িলের দিকের রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে, সেই সঙ্গে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজটের।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) নতুন বাজার এলাকায় বেলা ১১টার পর ব্যাটারিচালিত রিকশা-ইজিবাইক চালকরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এতে নতুন বাজার মোড় থেকে যমুনা ফিউচার পার্ক হয়ে কুড়িল ফ্লাইওভার পর্যন্ত যানজট তৈরি হয়েছে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যাটারিচালিত রিকশা-ইজিবাইক চালকরা বলেন, আমরা তো প্রধান সড়কে আমাদের এই বাহন চালাই না, আমরা অলিগলিতে এই যানবহান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। আমরা অনেকেই লোন করে এসব রিকশা কিনেছি, অনেকেই কিস্তির মাধ্যমে এই গাড়ি সড়কে নামিয়েছি। এই গাড়ি বন্ধ হলে আমরা খাব কী? আমাদের অনেকের গাড়ি আটকে রাখা হয়েছে থানায়। একটাই দাবি আমাদের পেটে লাথি না মেরে এসব অটোরিকশা চালানোর অনুমতি দেওয়া হোক। তা না হলে আমরা পথে বসে যাব।
এদিকে রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন বলছে, যখন ব্যাটারিচালিত রিকশা বিক্রি হলো, যন্ত্রাংশ আমদানি করা হলো তখন সরকার কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে এখন দরিদ্র মানুষের আয় বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। অবিলম্বে বুয়েট প্রস্তাবিত রিকশাবডি, গতি নিয়ন্ত্রক, উন্নত ব্রেকসহ ব্যাটারিচালিত রিকশা রাস্তায় চলতে দিতে হবে। লাখ লাখ রিকশাচালক চড়া সুদে ঋণ নিয়ে অথবা সম্পত্তি বিক্রি-বন্ধক রেখে ব্যাটারিচালিত রিকশা কিনেছেন। তাছাড়া গণপরিবহন হিসেবে এখনও শহর কিংবা গ্রামে রিকশা অপরিহার্য। এ অবস্থায় কোনো যুক্তিতেই সরকার গরিব রিকশাচালকদের সর্বস্বান্ত করে পথে বসিয়ে দিতে পারে না।

অন্যদিকে সড়ক পরিবহন টাস্কফোর্সের সভায় ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান বন্ধ নয়, কেবল ব্যাটারি বা মোটর খুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বুধবার (২৩ জুন) মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, গত রোববার (২০ জুন) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত টাস্কফোর্সের ৩য় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে রোববার সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি সারাদেশে রিকশা-ভ্যানের মধ্যে মোটর লাগিয়ে রাস্তায় চলছে। শুধু সামনের চাকায় ব্রেক, পেছনের চাকায় কোনো ব্রেক নেই বা ব্যবস্থা থাকলেও তা অপ্রতুল। সেগুলো যখন ব্রেক করে যাত্রীসহ গাড়ি উল্টে যায়। এ ধরনের দৃশ্য আমরা দেখেছি। আমরা দেখেছি হাইওয়েগুলোতেও এ রিকশা চলে আসছে। এজন্য সারাদেশে এই ধরনের রিকশা... প্যাডেলচালিত রিকশার বিষয়ে আমরা বলছি না। প্যাডেল চালিত রিকশাকে যারা ইঞ্জিন দিয়ে রূপান্তর করেছেন সেই সব রিকশা-ভ্যান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত আজকের সভায় হয়েছে।
এএসএস/জেডএস