বায়ুদূষণ মোকাবিলায় রাঙামাটিতে বসবে এয়ার মনিটরিং মেশিন

রাঙামাটি প্রথমবারের মতো নিয়মিত বায়ুর মান পরিমাপ ও গবেষণার আওতায় আসতে যাচ্ছে। বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এবং রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাবিপ্রবি) একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে, যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্থাপন করা হবে আধুনিক এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং সিস্টেম এবং গঠিত হবে ক্লিন এয়ার ক্লাব। পার্বত্য এলাকার পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ বোঝা এবং সমাধানের পথ খুঁজতে এই উদ্যোগকে বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রোববার (৩০ নভেম্বর) বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই সমঝোতা স্মারক সই হয়। চুক্তিটি দেশের পার্বত্য অঞ্চলে বায়ুর মান নিয়ে নির্ভরযোগ্য ডেটা সংগ্রহ এবং তরুণদের গবেষণায় সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ তৈরি করবে।
স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার। প্রধান অতিথি ছিলেন রাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান। এছাড়া ক্যাপসের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. নাছির আহম্মেদ পাটোয়ারী, রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট তানহা বিন মর্তুজা নিলয়সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, নির্মল বায়ু এখন জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ এবং অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলোর একটি। পার্বত্য অঞ্চলের বায়ুমান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কোনো নিয়মিত পর্যবেক্ষণ হয়নি— এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও সামাজিক সচেতনতায় যুক্ত করা ভবিষ্যতের পরিবেশ সুরক্ষায় বড় ভূমিকা রাখবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই চুক্তি রাঙ্গামাটিতে বিজ্ঞানভিত্তিক পরিবেশ-ব্যবস্থাপনার নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করবে।
রাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান বলেন, এ উদ্যোগ আমাদের শিক্ষার্থীদের হাতে গবেষণার বাস্তব সুযোগ তুলে দেবে। পরিবেশ নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী তরুণরা এখন ডেটা-ভিত্তিক বিশ্লেষণ শিখতে পারবে, যা ভবিষ্যতে নীতি নির্ধারণেও সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে, এই চুক্তির আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং মেশিন স্থাপন করা হবে, যা প্রতিদিন বায়ুর মান পরিমাপ করে গবেষণার জন্য ব্যবহারযোগ্য তথ্য তৈরি করবে। পাশাপাশি গঠিত হবে ক্লিন এয়ার ক্লাব, যেখানে শিক্ষার্থীরা গবেষণা, সচেতনতামূলক কার্যক্রম, কর্মশালা এবং কমিউনিটি-ভিত্তিক প্রকল্পে অংশ নিতে পারবে।
ক্যাপস এবং রাবিপ্রবি জানায়, বায়ুদূষণ সম্পর্কিত গবেষণা, জনসম্পৃক্ততা, এবং তথ্যভিত্তিক সচেতনতা কার্যক্রম রাঙামাটির স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উপকারে আসবে। একই সঙ্গে দেশের পার্বত্য পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠায় এটি সহায়ক হবে।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সমঝোতা স্মারক রাঙামাটিকে দেশের বায়ুদূষণ গবেষণার নতুন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে পরিষ্কার বায়ু নিশ্চিতকরণে এটি একটি প্রভাবশালী উদ্যোগ হয়ে উঠবে।
টিআই/এমজে