অনানুষ্ঠানিক শ্রমিকদের অধিকাংশই স্বীকৃতির বাইরে

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশের শ্রম বাজারে অনানুষ্ঠানিক শ্রমিকদের সংখ্যা অত্যধিক হলেও তাদের অধিকাংশই কোনো স্বীকৃতি বা সুরক্ষার বাইরে রয়েছেন।
আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে তেজগাঁওয়ের আলোকি কনভেনশন সেন্টারে অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নারী চা শ্রমিক জোট, গৃহকর্মী জাতীয় ফোরাম, নারী গৃহভিত্তিক তৈরি পোশাক শ্রমিক নেটওয়ার্ক ও নারী মৎস্য শ্রমিক নেটওয়ার্ক আয়োজিত ‘অনানুষ্ঠানিক প্রান্তিক আনুষ্ঠানিক খাতের নারী শ্রমিক সম্মেলন ২০২৫’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক সংখ্যা ৮৫ শতাংশ। এর ফলে তারা অধিকাংশ অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকেন। চা শ্রমিক, মৎস্যজীবী বা গৃহশ্রমিকদের অবদান ছাড়া আজকের অর্থনীতি চলবে না। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা প্রায়শই শুধু আনুষ্ঠানিক খাত দেখেন, অনানুষ্ঠানিক শ্রমিকদের অবদান বিবেচনা করেন না। আর এর ফলে অর্থনীতির অসাবধানতার কারণে অনানুষ্ঠানিক শ্রমিকদের অবদান জানা হচ্ছে না এবং অবদান না জানার কারণে তাদের স্বীকৃতিও দেওয়া হচ্ছে না।
উপদেষ্টা বলেন, নেতৃত্ব গঠন একটি একক প্রক্রিয়া নয়, এটি সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে গড়ে ওঠে। যদিও প্রতিটি শ্রমিকের সমস্যা আলাদা, তবুও নারীরা সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে শোষণের শিকার। নারী শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা শুধু তাদের স্বার্থে নয়, বরং জাতীয় উন্নয়নের জন্যও অত্যন্ত জরুরি।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের নিয়ে যখন আমরা কথা বলি, তখন বঞ্চনার কথাই সামনে আসে। বাস্তবে তাদের জন্য নেই কোনো স্বীকৃতি, নেই অধিকার। তারা যে পরিমাণ পরিশ্রম করে, যে শোষণের শিকার হয়, তার বিনিময়ে প্রাপ্যটুকুও পায় না।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কর্মজীবী নারী সংগঠনের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক সুনজিদা সুলতানা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শ্রম সংস্কার কমিশনের সাবেক প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, চা বাগান থেকে মৎস্য খাত, আমাদের সম্মিলিত শক্তিই আমাদের স্বীকৃতি ও ন্যায়ের পথ খুলে দেয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় নারী শ্রমিকদের উপস্থিতি জরুরি, কারণ দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ডই তারা।
অক্সফাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশীষ দামলে বলেন, নারীরা যখন সংগঠিত হয়, কথা বলে এবং নেতৃত্ব দেয়, তখন কী কী সম্ভব হয় তার শক্ত প্রমাণ এই কনভেনশন। উন্নয়নের পথচলায় অনানুষ্ঠানিক নারী শ্রমিকদের অধিকার, মর্যাদা ও নেতৃত্ব নিশ্চিত করতেই হবে।
এসএইচআর/এনএফ