আইন ভঙ্গ করলেই আইনের আওতায় নিয়ে আসবো : ডিএমপি

যে যত বড় ক্ষমতাশালী হোন না কেন, আইন যিনি ভঙ্গ করবেন তাকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো বলে জানিয়েছেন ডিএমপির ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি ডিভিশনের যুগ্ম কমিশনার সানা শামীনুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সরকারি আদেশ অমান্য করে সচিবালয়ে কর্মরত চাকুরিজীবীদের ২০ শতাংশ সচিবালয় ভাতার দাবিতে আন্দোলনকারীদের ৪ জনকে আটক ইস্যুতে তিনি এসব কথা বলেন৷ 

তিনি বলেন, রোববার থেকে সচিবালয় বন্ধের একটা হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে এই মুহূর্তে আমরা এই অন দা স্পট চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি এটা আপনারাও দেখেছেন। এখানে আমরা যাচাই বাছাই করে দেখব কার কতটুকু দায় দায়িত্ব রয়েছে।

তিনি বলেন, গতকালকের ঘটনা আমাদের কাছে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে, আপনাদের কাছেও রয়েছে। যারা সাংবাদিক ছিলেন, আপনারা গতকালকেও আমি দুই দুইবার তাদেরকে আমি শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শেষ করার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু তারা কিন্তু সেই বিষয়টি তারা আমলেই নেয়নি। সুতরাং আমরা এই মুহূর্তে যাদেরকে নেওয়া হয়েছে অন দা স্পট যারা আইন ভঙ্গ করেছে, শুধু আমরা তাদেরকে বেছে বেছে কয়েকজনকে নিয়েছি। এইটা যদি অব্যাহত থাকে, যত মানুষ আইন ভঙ্গ করবে আমরা সবাইকে আইনের আওতায় আনবো।

ওদেরকে কি গ্রেপ্তার করেছেন না? আমি এটাই বলতে চাচ্ছি, আমরা আপাততভাবে আমাদের হেফাজতে নিয়েছি, যাচাই বাছাই করে দেখব। আমাদের কাছে ভিডিও ফুটেজ আছে, আমরা যাচাই বাছাই শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।

সানা শামীনুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে যতগুলো কেপিআই রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম প্রধান কেপিআই হচ্ছে বাংলাদেশ সচিবালয়। আপনারা জানেন যে বিগত দিনে এখানে যারা কর্মচারীর নামে উচ্ছৃঙ্খলতা করেছেন তারা। বিগতদিনের ঘটনা আপনাদের সবাই জানা আছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা গতকাল রাতেও তাদের অনেক বুঝিয়েছি। কিন্তু তারা প্রশাসনের কোনো কথা শোনে নাই। তারা হুমকি ধমকি অব্যাহতভাবে দিয়ে চলেছে। এটি হচ্ছে বাংলাদেশের প্রশাসনের প্রাণ কেন্দ্র। এখানে কোনো ধরনের সভা সমাবেশ মিছিল মিটিং করার অনুমতি নাই।

তিনি বলেন, এটি কেপিআই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নির্দিষ্টভাবে সার্কুলার দিয়ে বাংলাদেশ সচিবালয় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টসহ যমুনা যেটি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন সেখানে মিছিল মিটিং রাজনৈতিক কোনো ধরনের সভা, সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমরা গতকাল এবং আজকেও এই মেসেজটি তাদের দেওয়ার চেষ্টা করেছি যে আপনারা কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এখানে সৃষ্টি করবেন না। যাতে কোনো ধরনের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। এ জাতীয় কোনো কর্মকাণ্ড আপনারা করবেন না।

ডিএমপির এই যুগ্ম কমিশনার বলেন, গতকালকেও তারা আইন ভঙ্গ করে এখানে উপদেশটাকে জিম্মি করে তাদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার চেষ্টা করেছে। এটি আমরা মনে করি ভিন্ন অর্থে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র কিনা আমরা সেটি খতিয়ে দেখছি। আজকে আপনারা দেখেছেন আমরা তাদেরকে বিভিন্নভাবে

গতকালকে মেসেজ দেওয়া সত্ত্বেও উপদেষ্টা এবং সচিব মহোদয়ের বারবার আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও তারা এগুলো কর্ণপাত করেন নাই এবং কাউকে উনারা ঠিক রেসপন্স করেন নাই। ঠিক ওই অর্থে প্রশাসনের কোনো কথাই তারা কর্ণপাত করেননি। তো আজকে আবার যখন তারা একই পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছে, আমরা তাদেরকে সময় দিয়েছি। আপনারা দেখেছেন, আমি নিজেও ঘোষণা দিয়েছি তারা সেখানে কর্ণপাত করে না। তারা এ ধরনের মিছিল অথবা সমাবেশ যেটা বেয়নী কর্মকাণ্ড, সেই বেয়নী কর্মকাণ্ডকে তারা অব্যাহত রেখেছে।

তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কোনোভাবেই কোনো আইনি কর্মকাণ্ড কোথাও একসেপ্ট করবে না। আপনারা এই আগেও দেখেছেন আমরা এখনো আপনাদের মাধ্যমেই বলতে চাই যতগুলো কেপিআই রয়েছে– বিশেষ করে যমুনা, সচিবালয়, সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট এবং যখন কমিশনার স্যার সার্কুলার দিয়ে যে সমস্ত এলাকায় মিছিল মিটিং সভা, সমাবেশ শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করেন। ওইসব এলাকায় যাতে আপনারা কোনো ধরনের আইন ভঙ্গ না করেন, সেজন্য আমি আপনাদের মাধ্যমে সবাইকে এই মেসেজটি দিতে চাই যে আইন আপনারা কেউ হাতে তুলে নেবেন না। বর্তমান সরকার বিভিন্ন কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত সমস্যার কিন্তু সমাধান করে যাচ্ছে। যে কোনো সমস্যার সমাধানের একটা লিগাল পথ রয়েছে। কিন্তু আপনি যখন যানবাহন চলাচল বন্ধ করেন, পথচারীদের বিঘ্ন সৃষ্টি করেন, মানুষের নিরাপত্তাহীনতার কারণ হয়ে দাঁড়ান, প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সেখানে যখন আপনি বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করেন, তখন অবশ্যই আইন তার নিজস্ব পথে চলবে।

তিনি বলেন, আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো। সে যেই হোন, যত বড় ক্ষমতাশালী হন না কেন, আইন যিনি ভঙ্গ করবেন তাকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।

এমএম/বিআরইউ