অবহেলায় গর্ভের সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ : ৪ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকদের অবহেলায় গর্ভের সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতালটির চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা সাত্তারের আদালতে ভুক্তভোগী নাসরিন আক্তার মামলাটি দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি তদন্তের জন্য ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করা হয়েছে।
মামলার বিবাদীরা হলেন– চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. সিরাজুন নূর, পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. নুরুল হক, পরিচালক (মেডিকেল অ্যাফেয়ার্স) ডা. এ. এফ. এম. আশরাফুল করিম এবং ডেপুটি ডিরেক্টর (অ্যাডমিন/আইসিইউ) ডা. মো. আবু সাইদ চৌধুরী।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর সকালে প্রসবব্যথা নিয়ে নাসরিন আক্তারকে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন তার গর্ভকাল ছিল ৩৭ সপ্তাহ। আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্ট অনুযায়ী গর্ভের সন্তান সুস্থ ছিল। তবে হাসপাতালে ভর্তির পর রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সরা সময়মতো জরুরি চিকিৎসা দেননি বলে অভিযোগ করা হয়।
ভুক্তভোগীর স্বজনদের অভিযোগ, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলেও আল্ট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়– এমন কথা বলে চিকিৎসা দিতে দেরি করা হয়। দীর্ঘসময় লেবার রুমে ফেলে রাখার ফলে রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় এবং অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। পরে একজন সিনিয়র কনসালটেন্ট এসে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে জরুরি অস্ত্রোপচারের নির্দেশ দেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিজারিয়ান অপারেশন করা হলে গর্ভে থাকা সন্তান মৃত অবস্থায় জন্ম নেয়। পরে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে মায়ের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়।
বাদীপক্ষের দাবি, সময়মতো যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হলে নবজাতককে বাঁচানো যেত। ঘটনার পরদিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয় এবং ভুক্তভোগী পরিবারকে বারবার অপেক্ষায় রাখা হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রিগ্যান আচার্য্য বলেন, চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগে চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।
এমআর/এসএসএইচ