সরকারের চরম ব্যর্থতা নিয়ে আসিফ মাহমুদসহ ৯২ বিশিষ্ট ব্যক্তির বিবৃতি

উন্নত চিকিৎসার জন্য গুলিবিদ্ধ জুলাইযোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদিকে ঘাতকদের হাত থেকে রক্ষায় ব্যর্থ হওয়া এবং হত্যাচেষ্টার ৯৬ ঘণ্টা পরেও ঘাতকদের ধরতে না পারা সরকারের চরম ব্যর্থতাকে জাতির সামনে নগ্ন করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ৯২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। বিবৃতি দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও, যিনি সপ্তাহখানেক আগেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা ছিলেন।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে গণমাধ্যমে তারা এই বিবৃতি পাঠান।
এতে বলা হয়, তরুণ রাজনৈতিক নেতা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যার উদ্দ্যেশ্যে গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর, পল্টন এলাকায় গুলি করে জামিনে থাকা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান। ঘটনার ৯৬ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও প্রশাসন এখনো প্রধান অভিযুক্ত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উল্টো নানা কৌশল ও প্রচার সর্বস্ব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অবহেলাকে আড়াল করছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। প্রকৃত অপরাধী, অপরাধের সহযোগী ও হুকুমদাতাদের গ্রেপ্তারের বদলে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়ে লোক-দেখানো আইনি তৎপরতার কূটকৌশলকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। একইসঙ্গে এমন সাজানো নাটক মঞ্চস্থ করার হীন চেষ্টাকে ঘৃণা ও নিন্দা জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা আরও দেখতে পেরেছি, ওসমান হাদির উপর মারণঘাতী হামলার পরও সরকার তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেনি। তার গ্রামের বাড়িতে চুরির মতো ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, সরকারের গোয়েন্দা ব্যর্থতা কোন পর্যায়ে আছে। বাংলাদেশপন্থি একজন তরুণ সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক নেতার উপর এমন ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পরও, এসব ব্যাপারে উদাসীনতার মাধ্যমে দেশপ্রেমিক জনগনের সঙ্গে মশকরা করা হয়েছে বলে আমরা মনে করছি।
এতে আরও বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের সরকার রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার পরও যেভাবে জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার উপর গত দেড় বছর ধরে সন্ত্রাসী হামলা চলমান রয়েছে, এতে করে স্পষ্ট প্রমাণিত হচ্ছে যে, প্রশাসনে থাকা আওয়ামী আমলা, পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থা এসব ন্যাক্কারজনক হামলার সঙ্গে জড়িত। একইসঙ্গে আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুলিশ, গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় বাহিনী সংস্কারে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। এতে করে রাষ্ট্রের আভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়ছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ভাষ্যমতে পরাজিত ও পতিত, ভারতীয় মদতপুষ্ট সন্ত্রাসীগোষ্ঠী, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ বারবার জুলাই জনতার উপর চোরাগোপ্তা হামলা ও নাশকতার পরিকল্পনা করছে। তারা আমাদের নাম ধরে ধরে, খুঁঁজে খুঁজে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এমতাবস্থায় সরকারের তরফে ওসমান হাদির পরিবার, সহকর্মী, স্বতন্ত্র অ্যাকটিভিস্ট ও জুলাই বিপ্লবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জোর দাবি জানাচ্ছি এবং অতিদ্রুত যথাযথ আইন প্রয়োগ ও প্রশাসনের সর্বোচ্চ কার্যক্ষমতা কাজে লাগিয়ে ওসমান হাদির উপর হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করতে আহ্বান জানাচ্ছি।
বিশিষ্টজনরা হলেন
নিয়াজ আহমেদ খান (উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), সালেহ হাসান নকিব (উপাচার্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়), তাসনীম সিরাজ মাহবুব (অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), সামিনা লুৎফা (অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম (অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), ড. কামরুল হাসান (অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), খাদিজা মিতু (অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়), ড. মো. নাজমুস সাদাত (অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়), ড. মুহাম্মদ শামসুজ্জামান খান রাজীব (অধ্যাপক, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ), মোশাহিদা সুলতানা (সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), মাহাদী হাসান (সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), ড. শিরিন আকতার (সহযোগী অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়), ড. মো. শহীদুল হক (সহযোগী অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়), আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আহসানুল মামুন (সহযোগী অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম), মোহাম্মদ শওকত আলী (সহযোগী অধ্যাপক, বিইউবিটি), শেহীন আমীন ভূঁইয়া (সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), শাহনেওয়াজ খান চন্দন (সহকারী অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়), ডক্টর মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান খান (অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়), মীর মো. আমিনুজ্জামান (সহকারী অধ্যাপক, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি), মুহাম্মদ সালাহ উদ্দিন (সহকারী অধ্যাপক, সাকারিয়া ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপলাইড সায়েন্স, তুরস্ক), ড. আ স ম মাহমুদুল হাসান (সহকারী অধ্যাপক, কারাবুক বিশ্ববিদ্যালয়, তুরস্ক), মো. আতাউর রহমান তালুকদার (সহকারী অধ্যাপক, বিইউপি), অরণি সেমন্তি খান (প্রভাষক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়), খলীলুল্লাহ মুহাম্মাদ বায়েজীদ (প্রভাষক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট), অলিউর রহমান সান (প্রভাষক, ইউল্যাব)।
আরো যারা রয়েছেন- এ এস এম কামরুল ইসলাম (প্রভাষক, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ), সুমাইয়া তামান্না (প্রভাষক, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ), মো. সাইফুল ইসলাম (শিক্ষক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ), গোলাম রব্বানী (প্রভাষক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট), মশিউর রহমান (শিক্ষক, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়), মো. আল আমিন রাকিব (প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস), মো. ফিরোজ হাসনাত (স্নাতকোত্তর টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট (জিটিএ), নর্দান ইলিনয় ইউনিভার্সিটি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র), ড. তানজিলুর রহমান (গবেষক ও প্রকৌশলী, আলাবামা, যুক্তরাষ্ট্র), ড. মো. আদনান আরিফ সালিম (লেখক, কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও শিক্ষক), রফিকুল আনোয়ার রাসেল (চলচ্চিত্র নির্মাতা ও শিক্ষক), মোহা. সাদিকুল ইসলাম (প্রভাষক, কৃষি বিভাগ, রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া), ইসরাত জাহান (সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ফাইন্যান্স বিভাগ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ), মোহাম্মদ মাইমুল আহসান খান (ডিন, আইন অনুষদ, আইআইইউসি), মোহা. ফাহিম ফয়সাল (শিক্ষক, আইআইইউসি), সৈয়দ মাহমুদুল হাসান (প্রভাষক, দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, আইআইইউসি), মোহাম্মদ ইব্রাহিম রুপম (সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ইটিই বিভাগ, আইআইইউসি), প্রফেসর মাহমুদুল হাসান (শিক্ষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়), বোরহান উদ্দীন নোমান (শিক্ষক, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি), মাবরুর রশীদ বান্নাহ (নির্মাতা), লতিফুল ইসলাম শিবলী (কবি, মহাপরিচালক, কাজী নজরুল ইনস্টিটিউট), তাসমিয়াহ আফরিন মৌ (লেখক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা), ধ্রুব হাসান (চলচ্চিত্র নির্মাতা), তারেক আহমেদ (চলচ্চিত্র নির্মাতা), এবিএম কামরুজ্জামান (ভূতত্ত্ববিদ, প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পেট্রোবাংলা), মীর লোকমান (মূকাভিনয় শিল্পী), আলী আহসান জোনায়েদ (আহ্বায়ক, আপ বাংলাদেশ), আরেফিন মোহাম্মদ (সদস্য সচিব, আপ বাংলাদেশ), রাফে সালমান রিফাত (প্রধান সমন্বয়কারী, আপ বাংলাদেশ), নাহিদ ইসলাম (আহ্বায়ক, এনসিপি), ইমরুল হাসান (কবি ও ক্রিটিক), মনিরুল মিরাজ (কবি ও ক্রিটিক), কাজী ওয়ালী উল্লাহ (কবি), রাহাত শান্তনু (কবি ও অ্যাক্টিভিস্ট), মীর হাবিব আল মানজুর (কবি), সোয়েব মাহমুদ (কবি), শাফায়াত আহমেদ (অবসরপ্রাপ্ত মেজর, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী), সাদিক মাহবুব ইসলাম (সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক), মাহমুদা মিতু (চিকিৎসক ও রাজনীতিবিদ), মুহাম্মাদ সজল (লেখক, অ্যাক্টিভিস্ট, নিউট্রিশনিস্ট), আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (সাবেক ক্রীড়া উপদেষ্টা), আবদুল কাদের (জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম মুখ), এবি জুবায়ের (সমাজসেবা সম্পাদক, ডাকসু), আরিফুর রহমান (অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যার্টনি জেনারেল), অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ (আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট), ড. শাকিব মুসতাভী (পোস্ট-ডক্টোরাল গবেষক, ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা, ইউএসএ), মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম (পিএইচডি গবেষক, আঙ্কারা ইউনিভার্সিটি, তুরস্ক), মোহাম্মদ ইশরাক (লেখক), ইফতেখার জামিল (লেখক), শহিদুল ইসলাম (পিএইচডি ক্যান্ডিডেট, পারডু বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিয়ানা, ইউএসএ), নাবিল ফারহান (সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, কোলজিস লিমিটেড, জাপান), কাওসার আহমেদ (গবেষক, সিবিএস), ফিরোজ আহমেদ (প্রাবন্ধিক), অনুবাদক ও রাজনীতিক আজহার উদ্দিন খান (কো-ফাউন্ডার, সিটিজেন রাইটস অ্যান্ড জাস্টিস নেটওয়ার্ক), হালিমা তুস সাদিয়া (এডুকেশন কনসালট্যান্ট), জুনাইদ আলমামুন (ডক্টোরাল ক্যান্ডিডেট, ওয়েইন স্টেট ইউনিভার্সিটি), ইয়াসির আরাফাত (স্টাফ রিপোর্টার, সমকাল), অ্যাডভোকেট রফিকুল হাসান লোদী (আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী), ড. মুহাম্মদ সাহেদুল আলম (কৃষি গবেষক, জার্মানী), মো. আবছার (গবেষক), তারিক মাহমুদ আজহারি (লেখক), মো. তৌফিকুর রহমান (ব্যাংকার), রাসেল মোহাম্মদ (রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার, জাপান), মোহাম্মাদ অলিউল ইসলাম (গ্রাজুয়েট স্টুডেন্ট, ডালহাউজি ইউনিভার্সিটি), তাইয়িব আহমেদ (ডক্টোরাল ক্যান্ডিডেট, কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটি), হোসাইন মোহাম্মদ তালিবুল ইসলাম (প্রকৌশলী), নুরুল আলম (অবসরপ্রাপ্ত সচিব), মো. রাকিবুল হাসান (মানবাধিকার কর্মী ও গবেষক)।
এআর/জেডএস