সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৮ মামলা

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের ভাই-বোনদের বিরুদ্ধে আটটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গ্রামের প্রান্তিক মানুষকে ব্যবসায়ী সাজিয়ে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড (ইউসিবিএল) থেকে প্রায় ৫৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচারের অভিযোগে এসব মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় জাবেদ পরিবারের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন কর্মচারী এবং ইউসিবিএল-এর একাধিক কর্মকর্তা ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যকেও আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাগুলো দায়ের করা হয়। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির উপপরিচালক সুবেল আহমেদ।
মামলার নথি অনুযায়ী, আটটি মামলার প্রতিটিতেই আসামি করা হয়েছে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের ছোট ভাই ও ইউসিবিএল-এর তৎকালীন পরিচালক আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনিকে। সাতটি মামলায় আসামি হয়েছেন ব্যাংকটির আরেক পরিচালক ও জাবেদের ভাই আসিফুজ্জামান চৌধুরী। তিনটি মামলায় জাবেদের বোন এবং ইউসিবিএল-এর সাবেক পরিচালক রোকসানা জামান চৌধুরীকেও আসামি করা হয়েছে। এছাড়া ইউসিবিএল-এর বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা, পরিচালনা পর্ষদের কয়েকজন সদস্য এবং জাবেদ পরিবারের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের আরও কয়েকজন কর্মচারীকে এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, গ্রামের সহজ-সরল ও প্রান্তিক মানুষের কাছ থেকে কৌশলে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পরে তাদের নামে ইউসিবিএল-এ হিসাব খুলে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হয়। ওই ঋণের অর্থ জাবেদ পরিবারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের নামে খোলা একই ব্যাংকের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। পরে সেখান থেকে টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়।
যাদের ব্যবসায়ী সাজিয়ে ঋণ নেওয়া হয়েছে, তারা মূলত বিভিন্ন পেশার সাধারণ মানুষ। তাদের মধ্যে রয়েছেন সেলুন কর্মচারী রাজধন সুশীল, কৃষক মো. মাঈন উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন, জসিম উদ্দিন ও নুরুল ইসলাম, প্রবাসী সাইফু উদ্দিন, ফুটবল খেলোয়াড় দিদারুল আলম এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক আমির হামজা।
আটটি মামলায় মোট ৫৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩ সালে এসব অনিয়ম ও জালিয়াতি সংঘটিত হওয়ার সময় সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। সে সময় ইউসিবিএল-এ জাবেদ ও তার স্ত্রী রুকমিলা জামানের একচ্ছত্র প্রভাব ছিল। জাবেদের ভাই-বোন এবং পরিচালনা পর্ষদের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সদস্য প্রভাব খাটিয়ে ঋণ অনুমোদন করেন এবং পরে মিলেমিশে অর্থ আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
এমআর/জেডএস