অপরাধীদের ‘ঢালাও জামিন’ ও প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে কঠোর প্রশাসন

#সীমান্তে কঠোর নজরদারি ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার : নির্বাচনের নতুন ছক
#প্রশাসনের লক্ষ্য ‘মডেল নির্বাচন’: ২০২৬-কে দৃষ্টান্ত হিসেবে গড়ার অঙ্গীকার
আসন্ন ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টিতে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিরা। নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার এবং প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের কথা জানিয়েছেন তারা। একইসঙ্গে চিহ্নিত অপরাধীদের জামিন রোধ ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কঠোর পদক্ষেপের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে একটি ‘মডেল নির্বাচন’ উপহার দিয়ে ইতিহাসের পাতায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করাই এখন প্রশাসনের মূল লক্ষ্য বলে জানান তারা।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে ডিসি-এসপি, সব রেঞ্জের ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন।
ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি বলেন, আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধপরিকর। আইজিপি নির্দেশে দেশের পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। দলমত-নির্বিশেষে আমরা অন্যায়ভাবে কাউকে কিছু করতে দেব না। বাংলাদেশে একটি উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি বলেন, প্রেস মিডিয়ায় যা দেখছি তাতে মনে হয় সিরিয়া-লিবিয়ায় বসবাস করছি। সাংবাদিকদের দেশের মানুষের কথা ভেবে রিপোর্ট করলে ভালো হয়। আমরা বর্তমানে কারো নিকট থেকে সাহায্য-সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমরা যাদেরকে গ্রেপ্তার করি তাদেরকে ছাড়াতে দিনে বক্তব্য দেওয়া রাজনৈতিক নেতারা রাতে তদবির করেন। প্রিজাইডিং অফিসারদের হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমাদের বাসনা এই ২৬’ সালের নির্বাচনকে ৩১’ এবং ৩৬’ সালে মানুষ যেন মনে করেন।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বলেন, আমাদের কাজ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা ও বৈধ অস্ত্র জমা করা। নির্বাচনের বাজেটটা যেন সময়মতো পাই। নির্বাচনকালীন সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সকল গুজব ছড়ানো হয় এটা বন্ধ করতে হবে। ইনশাআল্লাহ আমাদের খরচের মধ্যে মনোবল বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। আশা করছি ২০২৬ সালে একটি মডেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
রাজশাহী পুলিশ কমিশনার বলেন, আমরা সকল স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সমন্বয় করছি। এআই জেনারেটেড যেকোনো ছবি বা ভিডিও বন্ধ করার জন্য বিটিআরসিকে জানাচ্ছি। নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের পরে যদি সাজা দেওয়া হয় তাহলে এটা দেখে অন্য কেউ করার সাহস পাবে না। ২০২৬ সালের নির্বাচন ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে বলে জানান তিনি।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার বলেন, কুষ্টিয়া দৌলতপুরে কালু এবং কাঁকন– এই দুটি গ্রুপের সঙ্গে কেউ পারছে না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ড্রোন প্রয়োজন হতে পারে। উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে আমরা যদি যৌথভাবে মহড়া দিই তাহলে আশা করি কেউ অন্যায় কিছু করতে পারবে না।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে সব কাজ তাৎক্ষণিকভাবে করা হবে। অপরাধীদের ঢালাও জামিন বন্ধের বিষয়ে বিচার বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে।
সিলেট বিভাগীয় কমিশনার বলেন, বিজিবি ডেপ্লয়মেন্ট খুব জরুরি। বর্ডার দিয়ে অস্ত্র আসে, অপরাধী আসা-যাওয়া করে, তাই বর্ডার সংলগ্ন কেন্দ্রগুলোকে বিবেচনা করে কেন্দ্রের নিরাপত্তা বাড়ানো প্রয়োজন। ক্রিমিনালদের মুভমেন্ট ট্র্যাক করা প্রয়োজন। জেলখানার ভেতর থেকে অনেকে ক্রাইম করে ফেলছে, এটা দেখা উচিত। যারা চিহ্নিত অপরাধী তারা যেন কোনোভাবেই জামিন না পায়। যারা ষড়যন্ত্রকারী তারা সব সময়ই একটি অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে। আমরা ইতিহাসের সাক্ষী হতে চাই। ২০২৬ এর নির্বাচন ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে– এই প্রত্যাশা করেন তিনি।
এসআর/এসএসএইচ