চট্টগ্রামের বেইলি ব্রিজ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে যশোরে

দীর্ঘ এক দশক পর অবশেষে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার চাঁনখালী খালের ওপর নির্মিত পুরোনো চন্দ্রকলা বেইলি ব্রিজ অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ব্রিজটি খুলে যশোর বিভাগের কোথাও পুনঃস্থাপন করা হবে।
জানা গেছে, উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়নের চাঁনখালী খালের ওপর নির্মিত স্টিলের তৈরি এই বেইলি ব্রিজটি একসময় এলাকাবাসীর যাতায়াতের প্রধান ভরসা ছিল। গৈড়লা, ধলঘাট, তেকোটা, মুকুটনাইট ও ডেঙ্গাপাড়া এলাকার হাজারো মানুষের দৈনন্দিন চলাচলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল সেতুটি।
পরে ২০১৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর একই স্থানে ‘চন্দ্রকলা শেখ কামাল গার্ডার ব্রিজ’ নির্মাণ ও উদ্বোধনের পর পুরোনো বেইলি ব্রিজটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। তবে নতুন সেতু চালুর এক দশক পেরিয়ে গেলেও এলজিইডি এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের সমন্বয়হীনতার কারণে পরিত্যক্ত ব্রিজটি এতদিন অপসারণ করা হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে গত ২২ ডিসেম্বর ‘পটিয়ার চাঁনখালী খালের ‘চন্দ্রকলা সেতু’ এখন এক দশকের অভিশাপ’ শিরোনামে ঢাকা পোস্টে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ব্রিজটি সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
জানা গেছে, অকার্যকর বেইলি ব্রিজটি খালের পানির খুব কাছাকাছি নিচু অবস্থানে থাকায় জোয়ারের সময় ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছিল। এতে পটিয়া লবণ শিল্প নগরীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লবণ ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েন। দীর্ঘদিন ধরে নৌযান চলাচলে বাধার কারণে উপজেলার লবণ শিল্পও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে।
এ ছাড়া স্থানীয়দের অভিযোগ, পরিত্যক্ত ব্রিজটি মাদকসেবী ও অপরাধীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছিল। বিশেষ করে রাতের বেলায় সেখানে বখাটে ও মাদকসেবীদের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় আশপাশের এলাকায় ইভটিজিং, ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
পটিয়া উপজেলা লবণ মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক আল্লাই বলেন, এই ব্রিজটির কারণে লবণ ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। আমরা বিভিন্ন সময় এটি অপসারণের দাবি জানিয়েছি। অবশেষে অপসারণের খবরে আমরা সন্তুষ্ট। এখন লবণবোঝাই বোট নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে।
এ বিষয়ে পটিয়া উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী কমল কান্তি পাল বলেন, পুরোনো চন্দ্রকলা বেইলি ব্রিজটি অপসারণের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছিল। বর্তমানে ব্রিজটি খুলে অন্যত্র স্থাপনের কার্যক্রম চলছে।
এমআর/এসএসএইচ