করোনাকালে মরদেহ দাফনে মাস্তুল ফাউন্ডেশন

সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যেও করোনায় মরদেহ দাফন বা সৎকারে সক্রিয় রয়েছে মাস্তুল ফাউন্ডেশন। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মাস্তুল ফাউন্ডেশনের সেচ্ছাসেবীরা ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছেন।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয় থেকে এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক কাজী রিয়াজ রহমান জানান, দেশের বর্তমানে লকডাউন পরিস্থিতিতেও আমাদের দাফন সেবা চলমান। প্রতিদিন আমাদের ৩ থেকে ৪টি মরদেহ দাফন করতে হচ্ছে। যে পরিমাণে আমাদের কাছে কল আসছে, সে পরিমাণে আমরা সেবা দিতে পারছি না। অ্যাম্বুলেন্স স্বল্পতা, অক্সিজেন সিলিন্ডারের স্বল্পতার কারণে অনেক অসহায়কে সেবা দিতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ৫১০ মরদেহের সৎকার করা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত ও অন্যরোগে আক্রান্ত মরদেহও রয়েছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মাস্তুল ফাউন্ডেশন এই দাফন সেবা ও অক্সিজেন সেবা দিয়ে আসছে।
জানা গেছে, মাস্তুল ফাউন্ডেশনের রয়েছে নিজস্ব দাফন সেবা টিম। যে টিমের সবাই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, মরদেহ গোসল করানো থেকে শুরু করে কাফনের কাপড় পড়ানো, জানাজার নামাজ আদায় করানো, দাফন করা প্রতিটি কাজ এই দাফন টিমের সদস্যরা করে থাকেন। বর্তমানে অন্য জায়গায় মরদেহ গোছল করানো হয়ে থাকে। ভবিষ্যতে নিজেদের একটি স্থায়ী জায়গার মাধ্যমে মরদেহ গোছলের ব্যবস্থা করা হবে। এর জন্য সমাজের দানবীর ও সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে মাস্তুল ফাউন্ডেশন।
দাফন কাজের স্বেচ্ছাসেবীরা এসেছেন বিভিন্ন পেশা থেকে। কেউ ব্যাংকার, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ চাকরিজীবী, কেউ সাংবাদিক, কেউ শিক্ষক, কেউ শিক্ষার্থী। নারীদের দাফনের জন্য রয়েছে মাস্তুল ফাউন্ডেশনের আলাদা টিম। এখানে নারী স্বেচ্ছাসেবীরাই সব করে থাকেন।
বাংলাদেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটার এবং সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান করোনা মহামারির শুরুতে মরদেহ দাফন ও সৎকার করার জন্য মাস্তুল ফাউন্ডেশনকে অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেন।
মাস্তুল ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ সরকারের নিবন্ধিত সামাজিক প্রতিষ্ঠান। মাস্তুলের রয়েছে নিজস্ব স্কুল এবং এর বাইরে ২২টি স্কুলে, ১২ জেলায় ১১০০ সুবিধাবঞ্চিত গরিব শিক্ষার্থীদের স্কুল ব্যাগ, জুতা, মুজা, বই, খাতাসহ শিক্ষার সব উপকরণ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পুষ্টিকর খাবার, শিশু অধিকার, মৌলিক চাহিদা নিশ্চয়তা করা হচ্ছে। মাস্তুলের রয়েছে পিতামাতাহীন/অনাথ/এতিম বাচ্চাদের জন্য 'মাস্তুল শেল্টার হোম'। যেখানে আবাসিক/অনাবাসিক মিলে অর্ধশত জন বাচ্চা রয়েছে।
রয়েছে শেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, যার মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের কর্মক্ষম করে তোলা হচ্ছে। এর বাহিরে স্বাবলম্বী প্রজেক্টের মাধ্যমে ২৫০ জনকে স্বাবলম্বী করে তোলা হয়েছে। মাস্তুল ফাউন্ডেশন থেকে মৃত ব্যক্তিদের জানাজা, দাফন কাফন কার্যক্রম ও সৎকার করা হয়ে থাকে। এই কোভিড-১৯ করোনা দুর্যোগে মাস্তুল থেকে করোনায় আক্রান্ত মরদেহ দাফন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মাস্তুলের রয়েছে অসহায় ও গরিবদের জন্য ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স ও অক্সিজেন সেবা।
দাফন সেবা, অ্যাম্বুলেন্স সেবা ও অক্সিজেন সেবা পেতে কল করুন- 01730482279।
জেডএস
