আসছে আরও ৩ লাখ টন চাল

>> চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছে ১১৩টি প্রতিষ্ঠান
>> বরাদ্দপত্র ইস্যুর সাতদিনের মধ্যে খুলতে হবে ঋণপত্র
>> খুচরায় প্রতি কেজি সরু চালের দাম ৬৪-৬৬ টাকা
>> সরু চালের সঙ্গে বেড়েছে মাঝারি ও মোটা চালের দামও
>> বাজার নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত চলবে চাল আমদানি
বেসরকারিভাবে আরও তিন লাখ ৪৬ হাজার টন সিদ্ধ চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। সম্প্রতি খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে ১১৩টি প্রতিষ্ঠানকে চাল আমদানির অনুমতি দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এর মধ্যে রোববার (১০ জানুয়ারি) অনুমতি পেয়েছে ৬৪টি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানকে মোট এক লাখ ৭১ হাজার ৫০০ টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
গত ৬ জানুয়ারি ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। এসব প্রতিষ্ঠান মোট এক লাখ ৭৪ হাজার ৫০০ টন চাল আমদানি করতে পারবে।
সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ ভাঙা দানাবিশিষ্ট বাসমতি নয় এমন সিদ্ধ চাল শর্তসাপেক্ষে আমদানির জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বেসরকারিভাবে কত পরিমাণ চাল আমদানি করা হবে, তা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। তবে যতদিন না বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে ততদিন চাল আমদানি চলবে
ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম, সচিব, খাদ্য মন্ত্রণালয়
চাল আমদানির শর্তে বলা হয়েছে, বরাদ্দপত্র ইস্যুর সাতদিনের মধ্যে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে হবে। এ সংক্রান্ত তথ্য খাদ্য মন্ত্রণালয়কে তাৎক্ষণিকভাবে ই-মেইলে জানাতে হবে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা এক থেকে পাঁচ হাজার টন বরাদ্দ পেয়েছেন, তাদের এলসি খোলার ১০ দিনের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং ২০ দিনের মধ্যে বাকি চাল বাজারজাত করতে হবে।
এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান পাঁচ হাজার থেকে ২০ হাজার টন বরাদ্দ পেয়েছে তাদের এলসি খোলার ১৫ দিনের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং ৩০ দিনের মধ্যে বাকি ৫০ শতাংশ চাল এনে বাজারজাত করতে হবে বলে শর্ত দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
গত ৩ জানুয়ারি ১০ প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ পাঁচ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এরপর ৪ জানুয়ারি আরও ১৯ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ ২৫ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়।
দেশের বাজারে চিকন চালের দাম এখন প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) তিন হাজার ২০০ টাকা থেকে তিন হাজার ৪০০ টাকার মধ্যে রয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। খুচরায় প্রতি কেজি সরু চালের দাম পড়ছে ৬৪ থেকে ৬৬ টাকার মধ্যে। সরু চালের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাঝারি ও মোটা চালের দামও বেড়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যানুযায়ী, গত অর্থবছরও (২০১৯-২০২০) প্রতি কেজি চালের গড় দাম ছিল ৫৬ টাকা। যা বর্তমান বাজারে ৬০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
দেশের বাজারে চিকন চালের দাম এখন প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) তিন হাজার ২০০ টাকা থেকে তিন হাজার ৪০০ টাকার মধ্যে রয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। খুচরায় প্রতি কেজি সরু চালের দাম পড়ছে ৬৪ থেকে ৬৬ টাকার মধ্যে। সরু চালের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাঝারি ও মোটা চালের দামও বেড়েছে
কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের পরে প্রতি বছর চালের উৎপাদন প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ টন করে বেড়েছে। শেষ হওয়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে তিন কোটি ৮৭ লাখ টন চাল উৎপাদন হয়েছে। তবুও চালের দাম বাড়তে থাকায় আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার।

জানা গেছে, সরকারিভাবে চার লাখ মেট্রিক টন, জিটুজি পদ্ধতিতে দেড় লাখ মেট্রিক টন এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত বেসরকারিভাবে চাল আমদানি করা হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বেসরকারিভাবে কত পরিমাণ চাল আমদানি করা হবে, তা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। তবে যতদিন না বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে ততদিন চাল আমদানি চলবে।
তিনি আরও বলেন, ভোক্তাদের পাশাপাশি কৃষকদের বিষয়ও আমাদের মাথায় রয়েছে। সবদিক বিবেচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব, কখন চাল আমদানি বন্ধ হবে।
এসএইচআর/এমএআর