সেনাসদস্যের বিধবা স্ত্রী ও সন্তানের পাশে দাঁড়াল পুলিশ

দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানা এলাকায় চাকরিরত অবস্থায় মারা যাওয়া এক সেনা সদস্যের বিধবা স্ত্রীর জায়গা একটি প্রভাবশালী মহল দখল করার পায়তারা করছিল দীর্ঘ দিন ধরে। এই নারীর স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই সন্তানকে নিয়ে এই জমিতে ঘর তুলে বসবাস করতেন। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ক্ষমতায় আশপাশের লোকজনকে বলেও এ বিষয়ে তিনি প্রতিকার পাননি।
সর্বশেষ ওই নারী আর কোনো পথ না পেয়ে পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংয়ের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানান। অভিযোগ পেয়ে তার পাশে দাঁড়ায় পুলিশ। পুলিশের হস্তক্ষেপে সেনা সদস্যদের বিধবা স্ত্রী ও তার দুই সন্তান ঐ প্রভাবশালী মহলের হাত থেকে রক্ষা পায়।
রোববার (১১ জুলাই) পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মো. সোহেল রানা বলেন, ওই নারীর স্বামী সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। চাকরিরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুর আগে চাকরিসূত্রে প্রাপ্ত সুবিধাদি ও সামান্য সঞ্চয় দিয়ে এক টুকরো জমি কিনে দিয়ে গেছেন দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানা এলাকায়। ছোট সেই জমিতে একটি ঘর তুলে দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন ওই বিধবা। কিন্তু, স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই জমিটি দখল করার জন্য পায়তারা করতে থাকে প্রভাবশালী একটি মহল। এলাকায় নানা জনের কাছে ধারণা দিয়ে, নানা দেন দরবার করেও কোনো সমাধান হচ্ছিল না। কোনো সিদ্ধান্তই মানছিল না সেই পক্ষ। দুই সন্তানকে নিয়ে সবর্দা ভয়ের মধ্যে থাকতেন।
তিনি বলেন, হয়রানি সহ্য করতে না পেরে এক পর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) ওই নারী পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংয়ের কাছে সহযোগিতা চান। বার্তাটি ঘোড়াঘাট থানার ওসি মো. আজিম উদ্দিনকে প্রেরণ করে এলাকার জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে ওই নারীর সমস্যাটি স্থায়ীভাবে সমাধানের জন্য নির্দেশনা দেয় মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং।
তিনি আরও বলেন, বার্তা পেয়ে ওই এলাকার চেয়ারম্যান, অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের এ বিষয়ে সম্পৃক্ত করেন ওসি। অভিযুক্ত স্থানীয় প্রভাবশালী উক্ত ব্যক্তি জমির মালিকানার স্বপক্ষে গ্রহণযোগ্য কোনো দালিলিক প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হন।
এর প্রেক্ষিতে, যেকোনো প্রকার হয়রানি বন্ধের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে। ভবিষ্যতে ওই নারী ও তার দুই সন্তানকে কোনো প্রকার হয়রানি বা তাদের কোনো ক্ষতির চেষ্টা করা হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
মো. সোহেল রানা বলেন, ওই নারীর সম্মতি ও ইচ্ছায় এক লিখিত মুচলেকা নিয়ে অভিযুক্তকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির জিম্মায় দেওয়া হয়। ওই নারী ও তার দুই সন্তানকে অভয় দিয়ে আশ্বস্ত করেছে মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং। জানিয়েছে, ভবিষ্যতেও তাদের পাশে থাকবে বাংলাদেশ পুলিশ। পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বিধবা নারী ও অধ্যয়নরত তার দুই সন্তান।
এমএসি/ওএফ