ছুটিতে আসা কর্মীদের ফিরিয়ে নেবে মালয়েশিয়া

দেশে ছুটিতে এসে আটকে পড়া বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়ায় ফিরিয়ে নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ছুটিতে থাকা কর্মীদের নিজ নিজ নিয়োগকর্তা বা কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেছে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং মালয়েশিয়ার লেবার ডিপার্টমেন্টের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে এমন তথ্য দেওয়া হয়।
দূতাবাস জানায়, বৈঠকে মালয়েশিয়ার লেবার ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে ছুটিতে থাকা কর্মীদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে পাঁচটি বার্তা দেওয়া হয়েছে। বার্তাগুলো হলো-
ক) বর্তমানে বাংলাদেশে ছুটিতে থাকা কর্মীরা মালয়েশিয়ায় ফিরে আসার বিষয়ে দেশটির সরকার নীতিগতভাবে সম্মত আছে। এক্ষেত্রে কর্মীর নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের পদ্ধতি মেনে ফেরত আনার ব্যবস্থা করবেন। তাই ছুটিতে থাকা কর্মীদের নিজ নিজ নিয়োগকর্তা বা কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হয়েছে।
খ) বৈধকরণ (রিক্যালিব্রেশন) প্রক্রিয়ায় অধিক সংখ্যক অবৈধদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। করোনাভাইরাস বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে চলাচলের সুবিধার্থে বৈধকরণের জন্য দাখিল করা আবেদনকারী কর্মীর নামে বিশেষ কার্ড ইস্যু করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
গ) বৈঠকে মালয়েশিয়া সরকারকে নির্ধারিত উন্নত মান অনুযায়ী কর্মীদের আবাসন নিশ্চিত করতে অনুরোধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকার কাজ করছে বলে আশ্বস্ত করেছে দেশটির লেবার ডিপার্টমেন্ট।
ঘ) MCO চলার সময় বাংলাদেশি কর্মীদের বেতন প্রাপ্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে লেবার ডিপার্টমেন্টের পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিং অব্যাহত রাখার অনুরোধ করা হয়।
ঙ) মালয়েশিয়া সরকারের করোনাকালীন এবং করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাপকভাবে শুরু করার লক্ষ্যে নেওয়া পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের কর্মী নিয়োগের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
দেশটিতে মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার বা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন (এমসিও) চলমান থাকায় ভার্চুয়ালি বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
গত ৮ জানুয়ারি ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ হাশিম বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রতিমন্ত্রী মালয়েশিয়া থেকে দেশে এসে করোনায় আটকে পড়া বাংলাদেশি কর্মীদের ফিরিয়ে নিতে অনুরোধ করেন। জবাবে হাইকমিশনার হাজনাহ হাশিম বাংলাদেশি কর্মীদের ফিরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেন।
তিনি দ্রুতই এসব সমস্যার সমাধান হওয়ার আশা প্রকাশ করেন।
গত বছর সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে মালয়েশিয়ায় করোনার বিস্তার ঠেকাতে রিকভারি মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (আরএমসিও) জারি করা হয়। এতে দেশটিতে থাকা অনিবন্ধিত অভিবাসীদের মধ্যে নতুন করোনা সংক্রমিতের ক্লাস্টার চিহ্নিত হওয়ার পর বাংলাদেশসহ প্রায় ১২টি দেশের নাগরিকদের উপর মালয়েশিয়া প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যা গত ৩১ ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
৮ জানুয়ারি করোনা সংক্রমণ রোধে আবারও লকডাউন ঘোষণা করে মালয়েশিয়া। ১৩ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটির কুয়ালালামপুর, পুত্রাজায়া, সেলঙ্গর, সাবাহ, জোহর, মালাকা, পুলাউ পেনাং ও লাবুয়ান অঞ্চলে জারি করা হয়েছে ১৪ দিনের মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার বা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন (এমসিও)।
এনআই/এমএইচএস