টিকা বিতরণে স্বচ্ছতায় ব্যবস্থাপনা কমিটি দাবি ক্যাবের

করোনাভাইরাসের টিকা বিতরণে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে দেশব্যাপী টিকা ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন এবং এর জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে করনীয় নির্ধারণ, টিকা বিতরণের তালিকা প্রনয়ণে স্বচ্ছতা এবং কমিটিতে ভোক্তা প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানায় তারা।
বিবৃতিতে ক্যাব বলছে, কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় জরুরি উপকরণ, পিপিই ও অন্যান্য কেনাকাটায় স্বাস্থ্যখাতে অবারিত দুর্নীতির ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর উদ্যোগ দরকার। সুরক্ষা সামগ্রী,পিপিই বিতরণে যেরকম হ-য-ব-র-ল অবস্থা ও নানা অনিয়ম হয়েছিল, ঠিক একই অবস্থা পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষার সময়। তাই টিকা বিতরণে ফ্রন্টলাইনারের তালিকা প্রণয়ন ও প্রকৃত যোগ্যদের হাতে টিকা পৌঁছানো সম্ভব কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। তাই কোনোপ্রকার স্বজনপ্রীতি, প্রভাবমুক্ত হয়ে প্রকৃত যোগ্যদের হাতে টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিতে অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে আইন-বিধি অনুসরণ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত জরুরি।
ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ভোক্তা সরক্ষণ আইন-২০০৯ অনুসারে ক্যাব দেশের ভোক্তাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং এফবিসিসিআই ও ওষুধ শিল্প সমিতি দেশের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করছেন। সরকারের জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কমিটি গঠনের সময় ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন চেম্বার ও এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হলেও ভোক্তাদের প্রতিনিধি হিসেবে সংশ্লিষ্ট কমিটির সভাপতির অনুগত ও পোষ্য একজনকে মনোনীত করা হয়। যে কারণে ভোক্তাদের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয় না। অনেক সময় কমিটিগুলো সরকারের বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বশীল লোকজন ও ব্যবসায়ীদের দেন-দরবারের আসর হিসাবে পরিণত হয়। সাধারণ ভোক্তাদের স্বার্থ এখানে চরমভাবে উপেক্ষিত হয়। তাই জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট কমিটিগুলোতে ভোক্তাদের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা না হলে তৃণমূলে জবাবদিহিতা, সুশাসন ও ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় সরকারের মহতী উদ্যোগের সুফল সাধারণ জনগণ পাবে না।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, করোনায় লকডাউন চলাকালে সরকার জেলা-উপজেলা পর্যায়েও ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের নির্দেশ দিলে স্থানীয় প্রশাসন নিজেদের অনুগত, পোষ্য ও সমর্থকদের নাম দিয়ে তালিকা তৈরি করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে পাঠালেও কার্যত এই কমিটি কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ ছিল। ত্রাণ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, চিকিৎসা, প্রণোদনাসহ করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রমে এই কমিটির কোনো তৎপরতা জানা যায়নি। অনেকে সন্তান, স্ত্রী ও আত্মীয়-স্বজনকে এসব কমিটিতে বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধি বানিয়ে কমিটি গঠন করেন। যার চূড়ান্ত পরিণতি কমিটি কাগজেই সীমিত থাকে।
করোনা একটি স্বাস্থ্যগত সমস্যা হলেও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির গত এক বছরে কোনো কার্যক্রম গ্রহণের সংবাদ নেই। তাই জেলা-উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটি কার্যত মৃত। জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধানে স্থানীয় উদ্যোগে করনীয় নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পরামর্শ প্রদানে এই কমিটি গঠন হলেও ফলাফল শুন্য।
আরএম/এসআরএস