করোনার প্রভাবে ব্যয় ও প্রবৃদ্ধি অর্জনে গতি কমেছে: অর্থমন্ত্রী

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রভাবে বাংলাদেশের বাজেট বাস্তবায়নে ব্যয় ও প্রবৃদ্ধি অর্জনে গতি কমেছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে উত্থাপিত চলতি অর্থবছরের বাজেটের প্রথম প্রান্তিকের বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানান মন্ত্রী।
সংসদে দেওয়া প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, করোনার প্রভাবে সরকারি ব্যয় কমেছে। গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ ব্যয় কমেছে। সামনের দিনগুলোতে ব্যয় বৃদ্ধির জোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সরকারি ব্যয় হয়েছে ৬২ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা। যা বাজেটের ১১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। এ সময় ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল মোট বাজেটের ১৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। সার্বিকভাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে গত অর্থবছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় মোট ব্যয় ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ, বার্ষিক উন্নয়ন ব্যয় ২৬ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং পরিচালন ব্যয় ১ দশমিক ২৮ শতাংশ কমেছে।
করোনা মহামারির মধ্যে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিধারা থেমে নেই জানিয়ে প্রতিবেদনে অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। এর মোট পরিমাণ ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। জিডিপির হার ক্রমাগত হারে বেড়েছে। কোভিড-১৯ এর কারণে কিছুটা স্লথ হয়েছে। তারপরও এশিয়ার অনেক দেশের চেয়ে আমাদের জিডিপি অনেক ভাল। বর্তমানে জিডিপি ৫.২৪ শতাংশ। মাথাপিছু আয়ও বেড়ে হয়েছে ২০৬৬ মার্কিন ডলার। আমাদের রপ্তানি আয় ৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের অভিষ্ট লক্ষ্য ২০৪১ সালে উন্নত অর্থনীতির দেশে উন্নীত হওয়া। আমরা খুব শিগগিরই অনুন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হব। করোনাভাইরাসের ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর যুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্য দেখিয়েছে। কোভিড মোকাবিলায় সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপ এবং প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের ফলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে।
করোনায় বৈশ্বিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশের উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারা কিছুটা শ্লথ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গতবারের তুলনায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন ৮ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে কমে ৮ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আমদানি ব্যয় ১১ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমে ১২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ হয়েছে। বিপরীতে কর রাজস্ব ৪ দশমিক ১১ শতাংশ, প্রবাস আয় ৪৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ, রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
এইউএ/জেডএস